ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রথমে বন্ধুত্ব, অতঃপর প্রেম। এরপর কথা বলার সময় কৌশলে অশ্লীল-আপত্তিকর ছবি, অডিও ও ভিডিও রেকর্ড। তারপর শুরু হয় সংগৃহীত আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি। এ ধরনের এক ব্ল্যাকমেইলারকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ মেহমুদ হাসান রিয়াদ। গ্রেফতারের সময় তার হেফাযত হতে ব্ল্যাকমেইলিংয়ে ব্যবহৃত ০২টি মোবাইল ফোন ও ভুয়া ফেইসবুক আইডি উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ ২০২২) রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক ডিএমপি নিউজকে জানান, নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। তারপর কৌশলে আপত্তিকর অশ্লীল ছবি, অডিও ও ভিডিও কথা বলার সময় রেকর্ড করে রাখে। তারপর বিভিন্ন অজুহাতে সংগৃহীত ছবি, অডিও ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে। প্রতারণার শিকার এক ভিকটিমের অভিযোগে গত ২ মার্চ ২০২২ তারিখে ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান শনাক্ত করে হাজারীবাগ থানা এলাকা থেকে তকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতকে ধানমন্ডি মডেল থানার রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, পিপিএম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নুসরাত জাহান মুক্তা এর তত্ত্বাবধানে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক এর নেতৃত্ত্বে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।
এরকম প্রতারণা এড়াতে গোয়েন্দা-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো-
ভার্চুয়াল জগতে কাউকে না জেনে-শুনে তার সাথে সম্পর্ক তৈরি না করা।
আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও কলে কথা না বলা।
অডিও কলে আপত্তিকর কথা বার্তা না বলা।
ব্যক্তিগত কোন তথ্য, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি কোনভাবেই কারো সাথে শেয়ার না করা।
কাউকে দেখানো যাবে না এমন কোন ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও ধারণ না করা।
অনেকেই মনে করে, ছবি/ভিডিও ডিলিট করে দিলেই বোধহয় শেষ। কিন্তু ডিভাইস থেকে অনেক উপায়ে ডিলিট করা কন্টেন্ট পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই কোন অবস্থাতেই নিজের বা পরিবারের কারো অশ্লীল কোন কিছু ক্যামেরায় ধারণ না করা।