চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সম্পাদকের পদে থাকছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (২ মার্চ) এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জায়েদ ও নিপুণ। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন নিপুণ আক্তার। সংবাদমাধ্যমকে নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
নিপুন আক্তার বলেন, আমি ন্যায়বিচার পাইনি। আমি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ। তাই এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করবো। বিষয়টি দেখছেন আমার আইনজীবী। এরই মধ্যে তিনি কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
গত ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন হয়। প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় জায়েদ খানকে। পরে জায়েদের বিরুদ্ধে ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনা’সহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ। এমনকি এ পদে পুনরায় ভোটের দাবিও তোলেন। পরে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডে আবেদন করেন নিপুণ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।
তারও আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রুল শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওইদিন শুনানি মুলতবি করে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছিল বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি)। তবে, সেদিন কার্যতালিকায় থাকলেও রিটের শুনানি হয়নি। নিপুণের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ পিছিয়ে নতুন করে তারিখ নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নিপুণ আক্তার পান ১৬৩ ভোট। এরপর টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ একাধিক অভিযোগ আনেন নিপুণ। পরে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডে আবেদন করেন নিপুণ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।
নিপুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ৫ ফেব্রুয়ারি অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার দায়ে বিজয়ী প্রার্থী জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। একই সঙ্গে নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন।
আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন জায়েদ খান। ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এক সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন নিপুণ। ৯ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থা জারি করেন চেম্বার আদালত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থাও বহাল রাখা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে জারি করা রুল হাইকোর্টকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সুত্র: ইনকিলাব