ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার মূল আসামি সোলায়মান হোসেন ওরফে রিয়াদকে (২২) গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাটের কাটাবাড়ি এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ওই দুই স্কুলছাত্রী।
র্যাব বলছে, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ৫নং গাজিরভিটা ইউনিয়নের ডুমনিকুড়া গ্রামের দুই কিশোরী পাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পথে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে গ্রেফতার রিয়াদ ও তার সহযোগীরা। ধর্ষণের এ ঘটনায় রিয়াদসহ ছয়জন সরাসরি অংশ নেন। আর চারজন আশপাশে পাহারায় ছিলেন।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ ঘটনায় এক ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৪।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ইতোমধ্যে ধর্ষণের ঘটনাটি সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধনসহ হালুয়াঘাটের সীমান্তে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এছাড়া গতকাল (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল ৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে আলোচিত এ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর থেকে রিয়াদ একটি মালবাহী ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করেন। পরবর্তীতে গফরগাঁওয়ে আত্মগোপন করেন তিনি।
র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আরও বলেন, ধর্ষণের পর এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ওই দুই স্কুলছাত্রীকে হুমকি দেন অভিযুক্তরা। এমনকি এ ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকিও দেন তারা। এ অবস্থায় লোকলজ্জার ভয়ে ও প্রাণনাশের হুমকির ভয়ে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি গোপন রাখে ভুক্তভোগী পরিবার। এরপর গত ৩০ ডিসেম্বর এক ভিকটিমের পরিবার মামলা করে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার সোলায়মান হোসেন রিয়াদ এলাকায় চিহ্নিত বখাটে হিসেবে পরিচিত। তিনি এলাকায় ১০-১৩ জনের একটি বখাটে দলের নেতৃত্ব দতেন। তিনি ও তার সহযোগীদের অত্যাচারে এলাকার স্কুল পড়ুয়া মেয়েরা অতিষ্ঠ। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করারও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। রিয়াদের নামে হালুয়াঘাট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মাদক চোরাচালান মামলা চলমান রয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ও কারাভোগ করেন। তার সহযোগী অন্যান্য আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও মাদক কারবারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।