কারাগারে আটক থেকেও বিজয় লাভ করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মদ তুফান। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, যাতে তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হতে না পারেন।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তবে এখনও কারাগারে রয়েছেন তিনি।
অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মদ তুফানের স্ত্রী রোজিনা জানান, প্রচার-প্রচারণা, পোস্টার সাঁটানো, মাইকিংসহ নির্বাচনের কোনো কিছুই সেভাবে হয়নি। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রচারণার জন্য মাইকিং করতে বের হলেই মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। তবুও স্বামীর পক্ষে স্ত্রী রোজিনা একাই প্রচারণা চালিয়েছেন গ্রাম-মহল্লা ঘুরে ঘুরে। শেষ পর্যন্ত এলাকার মানুষ বিপুল ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন তুফানকে।
রাজশাহী জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী তুফান মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ১৬৫ ভোট। নৌকার প্রার্থী শফিকুর রহমান শফিক পেয়েছেন ৫ হাজার ৪২৮ ভোট। আর বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পলাশ আনারস প্রতীকে ৫ হাজার ৪৪৫ ভোট পেয়েছেন।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ তুফান বাউসা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে, এবার তাকে মনোনয়ন না দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিককে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এটি মেনে নিতে পারেননি সাবেক চেয়ারম্যান তুফান। তাই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্রোহী হিসেবেও প্রার্থিতা তুলে না নেওয়ায় গত ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা তুফানের টলটলিপাড়ার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় তার বাড়িতে। এলাকাবাসী ডাকাত সন্দেহে আওয়ামী লীগ নেতাদের ধরে গণধোলাই দেয়। পরের দিন ৫ ডিসেম্বর সকালে তুফান মামলা করতে বাঘা থানায় গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। আদালত কয়েক দফা তার জামিন নামঞ্জুর করেন। ভোটের আগে তুফানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।