1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লা উত্ত‌রের ছাত্রলীগ নেতা রু‌বেল গ্রেফতার কু‌মিল্লায়‌ স্ত্রী ও সন্তা‌নের স্বীকৃ‌তির দাবী‌তে মানববন্ধন কুমিল্লা ইয়ূথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ইমরান আওয়ামীলীগের এক নারী কর্মীকে মারধর ক‌রে পুলিশে সোপর্দ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কার্যক্রম শুরু আগামীকাল: হাসনাত সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০৭ জন গ্রেপ্তার পু‌লি‌শের ৮৪ জন কর্মকর্তা গ্রেপ্তারের তালিকায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানা‌তে নেতাকর্মীদের আনন্দ মি‌ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারত-বাংলাদেশের গ্রামবাসীর সংঘর্ষ ১৭ বছর পর কারামুক্ত হলেন লুৎফুজ্জামান বাবর

ল‌ঞ্চে স্ত্রী‌ হত্যার ঘাতক স্বামী মাসুদ‌ গ্রেফতার

নাগ‌রিক খবর অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৪৭২ বার পঠিত

দেনমোহরের টাকা পরিশোধের ভয়ে স্ত্রীকে লঞ্চে নিয়ে হত্যা করেন মাসুদ

ঢাকা থেকে বরিশালগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ কুয়াকাটা-২ এর কেবিন থেকে শারমিন আক্তার নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই নারীর স্বামী মো. মাসুদকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার মাসুদ শারমিনকে বিয়ে করলেও তার সঙ্গে সংসার করার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু শারমিনকে ডিভোর্স দিতে চাইলেও দেনমোহর বাবদ পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করার ক্ষমতাও ছিল না তার। এ বিষয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। হত্যাকাণ্ডের ১৫-২০ দিন আগে শারমিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাসুদ। ঘটনার পাঁচদিন আগে শারমিন সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হন। শারমিনের এই অসুস্থতার সুযোগে মাসুদ তাকে কাশির সিরাপের সঙ্গে বিষপান করান। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শারমিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী একটি লঞ্চের কেবিন থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে এমডি কুয়াকাটা-২ নামের লঞ্চটি বরিশাল পৌঁছালে শারমিন আক্তার নামে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা বাদী হয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ঘটনাটি সব প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলে র‌্যাব-৮ লঞ্চের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতকে গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে কক্সবাজার শহর থেকে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ এর অভিযানে মাসুদ হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মাসুদ লঞ্চে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, গ্রেফতার মাসুদ ২০১২ সাল থেকে আশুলিয়ার একটি কোম্পানিতে পিকআপের হেলপার হিসেবে কর্মরত। ভিকটিম শারমিন ১২ বছর ধরে ঢাকার তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়ায় তার চাচার বাসায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ২০১৯ সালের শুরুতে তাদের পরিচয় হয় ও বিয়ের আগে শারমিন বিমানবন্দর থানায় মাসুদের নামে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ওই মামলার নিষ্পত্তির জন্য উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর শারমিনের চাচার বাসায় তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা একত্রে বসবাস না করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ছিলেন।

গ্রেফতার মাসুদ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, মাসুদ শারমিনকে বিয়ে করলেও তার সঙ্গে সংসার করার বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু শারমিনকে ডিভোর্স দিতে চাইলেও দেনমোহর বাবদ পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করার ক্ষমতা তার নেই। এ বিষয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ফলে ঘটনার ১৫-২০ দিন আগে শারমিনকে তিনি হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাসুদ ঘটনার চারদিন আগে আশুলিয়া বাজার থেকে চেতনানাশক ওষুধের একটি বোতল কিনে আনেন। এরপর মাসুদ নিজে বরিশালে ড্রাইভিং লাইসেন্সের কাগজ জমা দিতে যাবেন বলে শারমিনকে নলছিটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করতে থাকেন। ৯ ডিসেম্বর দুপুর ১টার দিকে মাসুদ ও শারমিন মিরপুর-১ থেকে বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাটে আসেন।

জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ আরও জানান, হত্যার সময় যাতে শারমিনের চিৎকারে আশপাশের কেউ কিছু শুনতে না পারে এজন্য তিনি পরিকল্পিতভাবেই বরিশালগামী এমভি কুয়াকাটা-২ লঞ্চের কেবিন ভাড়া নেন। ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টায় লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। লঞ্চ যাত্রা শুরু করার পর মাসুদ সঙ্গে থাকা বিষযুক্ত কাশির সিরাপ শারমিনকে খাওয়ান। বিষ খাওয়ার পর শারমিন ৩-৪ বার বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বাইরে থেকে কেবিন তালাবদ্ধ করে লঞ্চের রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেতে যান মাসুদ।

রেস্টুরেন্ট থেকে ফিরে মাসুদ কেবিনের সামনে এসে দেখতে পান, শারমিন কেবিনের দরজার ফাঁক দিয়ে বিষের বোতলটি মেঝেতে ফেলে দিয়েছেন। মাসুদ তখন পানি দিয়ে কেবিনের দরজার সামনে পড়ে থাকা বিষ পরিষ্কার করে আবার কেবিনে প্রবেশ করেন। তখনো শারমিনের শ্বাস-প্রশ্বাস চলছিল। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

লঞ্চ যখন চরমোনাই ঘাটে এসে পৌঁছায়, তখন মাসুদ কেবিন থেকে বের হয়ে লঞ্চের দরজায় অবস্থান নেন। লঞ্চ বরিশাল শহরের ঘাটে এসে পৌঁছালে মাসুদ স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ থেকে বের হয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান।

র‌্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর দুপুরের পর দেশের সব ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি প্রচার হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে। র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দল ও র‌্যাব-৮ এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। অন্যদিকে মাসুদের এলাকায় ঘটনাটির ব্যাপারে জানাজানি হলে তিনি আত্মগোপনের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাতটি জেলার (বরিশাল, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার) বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com