রাজধানীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু সানি (৫) হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ মূল আসামীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ চাঁন মিয়া।
বুধবার ১৭ নভেম্বর সকাল ১১:৩০ টায় পল্টন থানার বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার দুপুর ১ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম(বার)।
চলতি মাসের ৯ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হয় শিশু সানি। তার মা ঝর্ণা বেগম ঐ রাতে তার ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ১০ নভেম্বর সকালে তার বোন জামাই মোঃ চাঁন মিয়াকে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে একইদিন রাত নয়টার সময় চাঁন মিয়া’র মাধ্যমে ঝর্ণা বেগম সংবাদ পান পল্টন মডেল থানা এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে শিশু সানির বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পল্টন মডেল থানায় সানির মা ঝর্ণা বেগম বোন জামাই চাঁন মিয়ার পরামর্শে ল্যাংড়া রাসেল, পিন্টু, জুয়েল, কালাম, পায়েল ও হীরার নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি প্রথমে পল্টন থানা পুলিশ তদন্ত করে এবং পরবর্তীতে মামলাটি গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ তদন্ত শুরু করে।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনার আগের দিন রাতে চান মিয়া শিশু সানিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ০৯/১১/২০১৯ খ্রিঃ তারিখ বিকেল বেলায় ফুটপাত থেকে ৬০ টাকা দিয়ে সে একটি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ক্রয় করে। অতঃপর সন্ধ্যা অনুমান ৭:০০ টায় স্টেডিয়াম এলাকা হতে ৫০ টাকা দিয়ে ৫টি ঘুমের ঔষধ ক্রয় করে। সন্ধ্যা ০৭:৩০ টায় স্টেডিয়ামে একটি দোকান থেকে ফ্রুটো জুস ক্রয় করে ঘুমের ঔষধ জুসের সাথে মিশিয়ে দেয় ও নিজে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটটি খেয়ে ফেলে। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১০:৩০ টায় শিশু সানিকে স্টেডিয়ামের ২নং ও ৩নং গেইটের মাঝামাঝি ঝর্ণার পাড়ে অন্যান্য পথশিশুদের সহিত খেলতে দেখে তাকে ডেকে নিয়ে আসে। অতঃপর চাঁন মিয়া ঘুমের ঔষধ মেশানো জুস খাইয়ে দেয় সানিকে। সানি জুসটি খাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়লে চাঁন মিয়া সানিকে রাত অনুমান ১১:০০ টায় পল্টন মডেল থানার গুলিস্থান পার্ক এলাকায় এক নির্জন স্থানে পাশবিক নির্যাতন তথা বলাৎকার শুরু করে। সে সময় শিশু সানি ব্যথা অনুভব করে শরীর মোচড় দিলে চাঁন মিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ৫ মিনিট সানির গলা টিপে ধরে রাখলে সানির মৃত্যু ঘটে। চাঁন মিয়া সানি’র মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও শিশু সানি’র লাশের সাথে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে বিকৃত যৌন কামনা চরিতার্থ করে। পরবর্তীতে চাঁন মিয়া নিজেই লাশ বস্তাবন্দি করে রাতে পুলিশ বক্সের সামনে ফেলে যায়। পরদিন ১০ নভেম্বর সানির লাশ পাওয়ার বিষয়ে সানির মা-কে খবর দেওয়ার মিথ্যা নাটক করে সে।
মর্মান্তিক ও বর্বর ঘটনায় সানি হত্যার আসামিকে গ্রেফতার করায় পুলিশের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সানির মা ।