১৯৯৩ সালে একসাথেই শুরু হয় দু্ই বন্ধুর পথচলা। দুজনই ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক। ধীরে ধীরে তাদের উন্নতি শুরু হয়। সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতায় মো. মিলন (৪৪) নিজের বোনের সাথে আবুল খায়েরের বিয়েও দেন। লেখাপড়া জানা আবুল খায়ের গড়ে তোলেন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘সজীব বিল্ডার্স’। সেই প্রতিষ্ঠানে তিনি নিজে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হন। তার বাড়ি-গাড়ি হলেও মিলন রয়ে যান নির্মাণ শ্রমিকই। সেখান থেকেই মূলত মিলনের মনে জমতে থাকে ক্ষোভ।
মিলন প্রাপ্ত মজুরিটাও ঠিকঠাক পেতেন না বলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে বোনের সাথে ভগ্নিপতি আবুল খায়েরের মনোমালিন্য তৈরি হয়। হাতও তোলেন বলে অভিযোগ মিলনের। সব মিলিয়ে মিলন গত ৬ আগস্ট বিকেলে ভগ্নিপতিকে নির্মাণাধীন একটি ভবনে ডাকেন কথা বলার জন্য। সেখানেই কথাকাটাকাটি ও বাগবিতণ্ডার মধ্যে উত্তেজনাবশত আবুল খায়েরকে আঘাত করেন।ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর গতকাল শনিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে অভিযুক্ত মিলনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালতেও ১৪৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মিলন।রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী তার কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান।
হত্যার নেপথ্য কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে গুলশান উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, মিলন একাই হত্যাকাণ্ড ঘটান। তবে তিনি পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাননি। হিট অব দ্য মোমেন্টে (মেজাজ হারিয়ে) তিনি প্রথমে লোহার রড দিয়ে ও পরে নির্মাণ সামগ্রী কাঠ দিয়ে আঘাত করেন।
অভিযুক্ত মো. মিলন ও ভিকটিম আবুল খায়ের দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করতেন। প্রথমে দুজনই ছিলেন নির্মাণ শ্রমিক। পরে তারা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তিল তিল করে গড়ে ওঠা এই নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের এমডি হন আবুল খায়ের। এতে তার ভাগ্য ফিরলেও ফেরেনি মিলনের। তিনি এখনো নির্মাণ শ্রমিকই।