মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সামরিক শাসনবিরোধীদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) দেশটির সাগাইং অঞ্চলে প্রতিরোধযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২৫ সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এ নিয়ে মাত্র তিন দিনে সাগাইংয়ে ৮৫ সেনার প্রাণহানির খবর পাওয়া গেলো। জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী কাওলিন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (কেএলপেডিএফ) খবর প্রকাশকারী কওলিন রেভোল্যুশনের (কেআর) বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।
এর আগে, গত বুধবার (২৭ অক্টোবর) কাওলিনের কিয়ুনবিন্থা গ্রামে সংঘর্ষে প্রথমে ৪০ সেনা নিহত হওয়ার কথা জানায় কেআর। পরে আরও ২০ সেনার মৃত্যুর খবর দিয়েছিল তারা। বৃহস্পতিবার কাওলিনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও ২৫ জান্তা সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গ্রুপটি। এতে তিন বেসামরিক প্রতিরোধযোদ্ধাও প্রাণ হারিয়েছেন।
কেআর প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, কেএলপিডিএফের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা বেশ কয়েকজন সেনার মরদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করছেন। গ্রুপটি জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মেজর ইয়ে হতুত ও’র আংশিক পুঁতে রাখা মরদেহও খুঁজে পাওয়া গেছে। জান্তা বাহিনী পালানোর সময় তাকে ওভাবে ফেলে রেখে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ছয়টি গাড়িতে করে জান্তা সেনারা কাওলিনে ঢুকেছিল বলে জানা যায়।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) স্থানীয় এক বাসিন্দা ইরাবতিকে জানিয়েছে, কাওলিনের অনেক এলাকাই এখন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) নিয়ন্ত্রণে। তারা বিভিন্ন রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়েছে।
সম্প্রতি জান্তা বাহিনী ও বিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের মধ্যে সহিংসতার অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছে কাওলিন। গত জুলাইয়ে সেখানে কেএলপিডিএফের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪৪ সেনা নিহত ও আরও ২০ জন আহত হন। এসময় মারা যান তিন প্রতিরোধযোদ্ধা।
কাওলিনের যোদ্ধারা এখন সরকারি বাহিনীর জোরালো প্রতিশোধমূলক অভিযান ঠেকাতে প্রস্তুত হচ্ছেন। শুক্রবার কেআর জানিয়েছে, জান্তা সেনাদের দুটি গ্রুপ কাওলিনের পূর্ব ও পশ্চিমে সশস্ত্র অভিযানের পরিকল্পনা করছিল। এদের মধ্যে একটি গ্রুপ প্রতিবেশী কিউনহ্লা শহর দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার জান্তা বাহিনী কিউনহ্লা এলাকায় পিডিএফ’কে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। সেখানে অভিযানে যোগ দিতে প্রায় ১০০ সেনাকে হেলিকপ্টারে করে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।