ফলোআপ–
১ অক্টোবর রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়াস্থ পলমল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সামনে ফার্নিচার কারিগর রমজান মিয়া খুনের ঘটনায় জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।
নিহত রমজান মিয়া নরসিংদীর রায়পুরা থানাধীন মির্জানগর এলাকার চান মিয়ার ছেলে। তিনি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার আব্দুর রশিদের ভাড়া বাসায় থেকে দি ভাই ভাই ফার্নিচার নামের একটি দোকানে কাজ করতেন।
সিআইডির এলআইসির একাধিক চৌকস টিম দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে রোববার ১৮ অক্টোবর রাতে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের কাছ থেকে নিহত রমজানের ব্যবহৃত লুণ্ঠিত মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি জব্দ করা হয়।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, নিহত রমজান মিয়া চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। আর্থিক অনটনের সংসারে জীবিকার সন্ধানে প্রায় ছয় বছর আগে শিশুকালেই ঘর ছাড়তে বাধ্য হন রমজান। এরপর খালার পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে আশুলিয়ার শিমুলতলাস্থ রানা মিয়ার ফার্নিচারের দোকানে ছয় হাজার টাকা বেতনে প্রায় তিন বছর কাজ করেন। পরবর্তীতে একই এলাকার দি ভাই ভাই ফার্নিচার দোকানে মাসিক ১১ হাজার টাকা বেতনে প্রায় তিন বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে তা সিআইডির নজরে আসে। সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও গভীরভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর সঙ্গে জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর আমিনুলকে নরসিংদীর জামগড়া এলাকা, সাগর মোল্লাকে রাজধানীর মুগদা ও ইউনুছকে আশুলিয়ার জিরানী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মুক্তা ধর বলেন, গত ১ অক্টোবর রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন জামগড়াস্থ পলমল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সামনে রমজান মিয়ার পথরোধ করে গ্রেফতার তিন ছিনতাইকারী। রমজান তার কষ্টার্জিত টাকায় কেনা মোবাইল ও টাকা না দিয়ে তাদের গতিরোধ করার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে রমজানের বুকে, পেটে ও সরু রড দিয়ে গলায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর রাত আনুমানিক ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত রমজানের খালা মোসাম্মৎ কুলসুম বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামি তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে।