জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করে। জাতিসংঘের ১৫ বছর আগেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের অন্যতম অনুস্বাক্ষরকারী দেশ। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছি। সোমবার (৪ অক্টোবর) ‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের সব শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করে যাচ্ছি। শিশুর সার্বিক বিকাশ ও অধিকার বাস্তবায়নে এবং শিশুদের প্রতি সহিংস আচরণ ও নির্যাতন বন্ধের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজের সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্ব বর্তমানে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন। শিশুরাও এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ সরকার এ মহামারি মোকাবিলায় সবদিক থেকে তৎপর রয়েছে। আমি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাসহ সব সচেতন নাগরিককে শিশুদের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব শিশুকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও আমি মনে করি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকের শিশুরাই আগামীতে দেশের নেতৃত্ব দিবে। সরকার শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিনোদন ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০, শিশু আইন-২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ এবং শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১ প্রণয়ন করেছি। পথশিশু, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু, বিদ্যালয় থেকে ঝরেপড়া ও প্রতিবন্ধী শিশুদের কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিত্যক্ত শিশুদের সেবা ও ভাতা প্রদান, পথশিশুদের পুনর্বাসনসহ তাদের জীবনমান উন্নত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। শিশুর শিক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে মিড-ডে মিল, শিশুর জন্য নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’
‘শিশুর পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য প্রায় ১১ লাখ মাকে মাতৃত্বকালীন ও ল্যাকটেটিং মাদার ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশুদের জন্য শিশুবিকাশ কেন্দ্র কার্যক্রম প্রসারণ এবং চা-বাগান ও গার্মেন্টস কর্মীদের শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন ও পরিচালনা করছে’ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি আশা করি, দেশের শিশুদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো।