ডেঙ্গুর ভয়ে আতঙ্কিত মানুষের এখন নতুন মাথাব্যথা জ্বর সর্দি। হঠাৎ সারাদেশেই বেড়েছে এমন উপসর্গের রোগীর সংখ্যা। চট্টগ্রামে জেলায় গত এক সপ্তাহ যাবত বাড়ছে জ¦র কাশি সর্দির রোগী। শিশু থেকে বয়স্ক সবাই কাবু হচ্ছে জ¦র-সর্দিতে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে গরম ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় এমনটি হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালমুখী রোগীর চাপও বাড়ছে। চট্টগ্রাম জেলায় করোনা সংক্রমণ কমতে থাকলেও ইনফুয়েঞ্জাজনিত কারণে শিশু ও বয়স্করা বেশি ভুগছে, তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং সামাজিক দূরত্বের ওপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নগরীর সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে অভিভাবকরা শিশু নিয়ে আসছেন। সবারই একই উপসর্গ জ¦র-সর্দি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কারও নিউমোনিয়া টাইফয়েড শনাক্ত হলেও বেশিরভাগ রোগীর ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকের দুদিন পরই জ¦র কমে যাচ্ছে। আবার অনেকের জ¦রের পর সর্দি বাড়ছে। গরমের শেষ আবার শীতের শুরুর এমন মৌসুমে প্রতিবছরই ঘরে ঘরে জ¦র সর্দি দেখা দেয়। একজন জ¦রে আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্যদেরও জ¦র হয়। তাই বিষয়টিকে ভাইরাল ফিভার মনে করছেন চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম জেলার সাবেক সিভিল সার্জন মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সরফরাজ খান বাবুল বলেন, চেম্বারে যেসব রোগী পাচ্ছি, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই জ্বর সর্দির। কিন্তু পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু করোনা নেগেটিভ। কারও কারও নিউমোনিয়ার কিছুটা প্রভাব থাকলেও বেশিরভাগের টেস্ট রিপোর্টের ফলাফল ভালো। ঋতু পরিবর্তনের কারণে ঠাণ্ডা গরমে জ¦র সর্দি হচ্ছে। তা দুয়েকদিনের মধ্যেই কমে যাচ্ছে। তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোন অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। এন্টিবায়োটিক ছাড়াই এসব জ্বর ও সর্দি উপশম হয়।
আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ নুরুল হক জানান, শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই ভাইরাল ফিভার। দুইদিন পরই জ¦র কমে যাচ্ছে। তবে অনেক শিশু নিউমোনিয়ার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে শিশুদের যাতে প্রথমে কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক দেয়া না হয়।এদিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়ও শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে চিকিৎসকের কাছে শরণাপন্ন হতে দেখা গেছে স্বজনদের। মূলত জ¦র সর্দির উপসর্গ থাকায় চিকিৎসকরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার দিতে বলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, চট্টগ্রামে গত শুক্রবার ৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে নগরীর ১৫ জন এবং উপজেলার ১৭ জন। তবে এদিন করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি।
চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ আসিফ খান জানিয়েছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি বর্তমানে নিম্মুমখী। তবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা চলবে না। এছাড়া করোনা উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হবে। বয়স্কদের বিশেষ যতœ নিতে হবে যাতে তারা সংক্রমণের শিকার না হয়।