রাজধানীর উত্তরা প্যারাডাইস টাওয়ারে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ জামাল উদ্দিন, শফিক ভূইয়া ওরফে বাছা, জসিম উদ্দীন, কাদের কিবরিয়া ওরফে বাবু, মোঃ শাকিল, আলামিন ও মুক্তা আক্তার।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১) ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর ডেমরা ও কুমিল্লা জেলার কান্দিরপাড় এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত হতে চুরির কাজে ব্যবহৃত ১টি হাতুড়ি, ১টি লোহার রেঞ্জ, ৩টি হ্যাক্সো ব্লেড ১টি প্লায়ার্স, ৩টি স্ক্রু ড্রাইভার, ২০টি সীম কার্ড জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ডিবি-দক্ষিণ) মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম, পিপিএম(বার)।
ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ১১ জুন, ২০২১ তারিখ ঢাকা মহানগরীর উত্তরা পশ্চিম থানার প্যারাডাইস টাওয়ারের ৮ম তলায় Golden Touch Imports INC এর অফিসে চুরির ঘটনা ঘটে। উক্ত চুরির ঘটনায় গত ১৩ জুন, ২০২১ উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা রুজু হয়। এই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উত্তরা জোনাল টিম। মামলা তদন্তকালে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এ চুরির ঘটনায় অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সুউচ্চ টাওয়ারে অবস্থিত বিভিন্ন নামিদামি অফিসে চুরি করার জন্য টার্গেট করে। সেবা গ্রহীতার বেশে এই চোর চক্রের সদস্যরা প্রথমে টার্গেটকৃত অফিসকে ২/৩ দিন ব্যাপী রেকি করার মাধ্যমে চুরির কৌশল রপ্ত করে। টার্গেটকৃত এ সকল অফিসের তালা, সিকিউরিটি লক, ডিজিটাল লক ও অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙ্গে মূল্যবান মালামাল ও টাকা পয়সা চুরি করে সুকৌশলে বের হয়ে চলে যায়।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা আদাবর টাওয়ারের ৪র্থ তলার এক্সপার্ট গ্রুপে, কাকরাইল নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১০ম তলায় আমিন গ্রুপে, গুলশান জব্বার টাওয়ারের ১৯ তলায় এসিউর গ্রুপে, বাড্ডা রূপায়ন টাওয়ারের ৬ষ্ঠ তলায় অবস্থিত সফট লিংক কোম্পানীতে ও ৭ম তলায় অবস্থিত এক্সজিবল কোম্পানীর অফিসে চুরি করেছে মর্মে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনাস্থলসমূহের সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ঘাটতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই মামলা তদন্তে প্রতীয়মান হয় যে সুউচ্চ ভবনের অফিসগুলোতে স্থাপিত সিসিটিভি কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করা হয়না। যার কারণে এসব অফিসে চুরি করা সহজ হয়ে যায়। অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অফিস মালিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী শফিকুল আলম, বিপিএম এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আছমা আরা জাহান এর তত্ত্বাবধানে উত্তরা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।