ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির আবদুল হামিদ। দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলিম ভাই-বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। ঈদ মুসলমানদের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতিটি মুসলমান এই দিনটির জন্য বছরব্যাপী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। ঈদে সে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে ধনী-দরিদ্র, ছোট-বড় নির্বিশেষে সবার মাঝে। ঈদ আমাদের জন্য আনন্দ আর উৎসবের বার্তার পাশাপাশি ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবনে বাস্তবায়নযোগ্য অনেক শিক্ষনীয় বার্তা নিয়ে আসে। কোরবানি আমাদেরকে ত্যাগ ও সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়।’
তিনি বলেন, আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল পবিত্র ঈদুল আজ। আল্লাহর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও ত্যাগের আদর্শ আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হলেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে সহমর্মিতা। কোরবানির আদর্শ ও মর্মার্থ অনুধাবন করে সমাজে শান্তি, সৌহার্দ্য ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতায় উজ্জ্বীবিত হতে হবে। ত্যাগের মনোভাবকে প্রসারিত করতে হবে আমাদের কর্মে ও চিন্তায়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় বানভাসী অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। সরকার বানভাসি এসব মানুষের জন্য খাদ্য ও নগদ আর্থিক সহায়তাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। অসহায় মানুষরা যাতে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। বন্যার্ত মানুষরাও যাতে ঈদের আনন্দে শরীক হতে পারে সে ব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে সবার কাজ করতে হবে।
ধর্ম মানুষকে কল্যাণ ও আলোর পথ দেখায়। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা ও আচার-আচরণ সমাজে আলোকিত মানুষ তৈরি করে। সমাজ থেকে অন্ধকার ও কুসংস্কার দুর করে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মাঝে গড়ে তোলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য বন্ধন। তাই আসুন কোরবানির শিক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করি।
তিনি আরও বলেন, এ বছর এমন এক সময়ে ঈদুল আজহা হচ্ছে যখন করোনার ছোবলে বিশ্ববাসী বিপর্যস্ত। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কর্মহীন হয়ে অনেক মানুষই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মানবিকতাকে যেন আমরা ভুলে না যাই। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও পরিচর্যায় ডাক্তার-নার্সদের পাশাপাশি পরিবার ও আত্নীয়-স্বজনসহ সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। করোনা মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং জীবনযাপনে ও চলাফেরায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজে সুস্থ থাকি, অন্যকে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করি।