ঐতিহ্যবাহী পাহারপুর বৌদ্ধ বিহার,আলতাদিঘী.পতিসর রবীন্দ্রনাথ কাচারীবাড়িসহ সরকারি পর্যঠন কেন্দ্র গুলো বন্ধ থাকলেও জেলার প্রায় ২০টি বিরোদন স্পটে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করলেও এসব স্পটে আসা বিনোদন প্রেমীদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।
জেলার নিয়ামতপুর,সাপাহার,আত্রাই ও সদরসহ বেশ কয়েটি উপজেলা এলাকায় গড়ে উঠেছে ২০ থেকে ২৫টি বিনোদন স্পট। এসবের মধ্যে নওগাঁর নিয়ামতপুরে বরেন্দ্র গার্ডেন পার্ক, বটবৃক্ষ ছায়া ঘেরা ঐতিহ্যবাহী বেলগাপুরহাট, সারি সারি তালগাছ বিশিষ্ট গ্রামীণ রাস্তা ঘুঘুডাংগা, ছাতড়া বিলের পাড়, হরিপুর ব্রীজ, সাপাহার উপজেলার জবই বিল,আত্রাইয়ে নবনির্মিত আত্রাই ব্রীজ,বান্দাইঘাড়া ব্রীজ ও নওগাঁ সদর উপজেলার দিঘলীর বিল,তালতলী,হাসাইগাড়ী বিলের পাড়ে ঈদের ছুটি আর শহরের ঝামেলা এড়িয়ে একটু সময় বের করে অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে ছুটছেন বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে।
প্রতিটি বিনোদন স্পটেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের আনন্দে দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা। করোনার ভয়াবহতা ভুলে গিয়ে সবাই নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে এভাবে ঘোরাঘুরিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিরা।
ঈদের দিন,দ্বিতীয় দিন ও তৃতীয় দিন শুক্রবার নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের ঘুঘুডাংগা গ্রামে দুধারে সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশায় শত শত মানুষ আসছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের আনাগোনাও। কেউ আসছে পরিবার-স্বজন নিয়ে, কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ গাছতলায় শুয়ে-বসে গল্প করছেন। সেই আনন্দঘন মুহূর্তটি স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ছবি ও সেলফি তুলছেন। তরুণদের কাউকে কাউকে ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল রেসিং করতেও দেখা গেছে।
ঘুঘুডাংগা সারিবদ্ধ তালগাছ বিশিষ্ট রাস্তায় ঘুরতে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা বলেন, ফেসবুকে দেখে আমরা ঘুরতে এসেছি। আসলে এখানে বিনোদন করার মত কিছু নেই। নেই বসা বা আড্ডা দেওয়ার মত কোন জায়গা, নেই কোন দোকান কিংবা পানির ব্যবস্থা। শুধু রাস্তায় ঘুরাঘুরি। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ছাতড়া বা হরিপুর কালামারা ব্রীজের ধারে লোক সমাগম অনেক বেশী। বিল পানিতে থৈই থৈই করছে। সুন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুনবেশী। জেলায় বিনোদন করার মত তেমন কোন জায়গা না থাকায় নিরুপায় হয়ে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতেই ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে যাচ্ছে এইসব জায়গায়।
হাসাই গাড়ী বিলে বেড়াতে আসা নওগাঁ শহরের উকিলপাড়া মহল্লার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন জানান এই স্পটে এসে শিশুরা খুব মজা করছে। দেখে অনেক ভাল লাগছে। একই কথা বলেন হাট-নওগাঁ মহল্লার গৃহিনী নাজনীন বেগম।
এদিকে আত্রাই উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কের নবনির্মিত ব্রীজে ঘুরতে আসা বিনোদন প্রেমী মেহেদী হাসান বলেন, ঈদের ছুটিকে নিজেদের মত করে কাটাতে ঘুরতে বের হয়েছি। নতুন দৃশ্যমান এ সড়কটিতে স্ব-পরিবারে ঘুরে অনেক মজা পেলাম। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে তিনি বলেন কর্মজীবনে থাকতে পরিবার নিয়ে বেড়ানোর সময় হয় না ,তাই একটু ঝুঁকি নিয়েই বের হয়েছি। তবে মুখে মাক্স ব্যবহার করছি।
এদিকে নওগাঁ দেশের মধ্যে আয়তনের দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা এবং খাদ্য উৎপাদনে বিশেষ করে ধানের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে বিনোদনের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে কোন পার্ক গড়ে উঠেনি। আবার এসব বিনোদন স্পটে প্রতিদিন মানুষের আসা-যাওয়া লেগে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।সুত্র/ একুশে