শুক্রবার ১০৮ জনকে হারিয়েছে বাংলাদেশ । আগামী সোমবার থেকে ৭দিনের কঠোর লকডাউন। আতংকিত হবার কি আছে! আমরা এখন এসব শব্দে এবং কাজে অভ্যস্ত । বলা যায় অনেকটা জয় করে নিয়েছি অন্যান্য দেশের চেয়েও ভালোভাবে।
কিভাবে কতক্ষণ পর পর হাত ধুয়ে নিতে হয়,কিভাবে মাস্ক পরে রাখতে হয়, স্যানিটাইজার সাথে রাখতে হয়,সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিভাবে চলতে হয়, ইতোমধ্যে আমরা সব রপ্ত করে নিয়েছি।
একটাই দুঃখ তা সঠিকভাবে সবসময় পালন করিনা, করতে চাই না, গুরুত্ব দেই না। নানা বাহানা করি প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে ।
জীবনের চেয়ে বাইরে যাওয়া, বেড়াতে যাওয়া,ঈদে বাড়িতে যাওয়া ইত্যাদি আমাদের কাছে বেশিই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। অথচ খুব জরুরি ছাড়া অনেক কাজই না করেও চলা সম্ভব ।
আমরা বেঁচে থাকলে এটা করবো, সেটা করবো কত প্ল্যান করি কিন্তু এখন প্রতিনিয়ত শুনতে পাই বাঁচি বা মরি সমস্যা নেই আগে ঘুরতে যেতে হবে,ঈদে বাড়ি যেতেই হবে শত বাঁধা ডিঙিয়ে । এবং সেখানে করোনা দিয়ে আসা অথবা নিয়ে আসা সবই ঘটতে পারে অসাবধানতা বা অসচেতনতার জন্য । জীবন কি করে এত মূল্যহীন হয়ে গেলো আমাদের কাছে চিন্তার বিষয় ।
জীবনের জন্য, বেঁচে থাকার জন্য , যখন সব আয়োজন তখন দেখছি সামান্য চাওয়া পাওয়ার জন্য জীবনকেই ঠুনকো করে ফেলছি। জীবন নিজেই মূল্যহীন হয়ে যাচ্ছে। কি অদ্ভুত ভাবে বদলে যাচ্ছে আমাদের চারপাশ। কাউন্সিলিং জরুরি । একবার আসা জীবন নিয়ে এত উচ্ছ্বাস , আসক্তি অথবা অবহেলা কোনটাই ঠিক নয়। জীবন চলবে জীবনের নিয়মে । সুখ দুঃখ আসবেই। তাই বলে ভীরুর মতো সময় অতিক্রম করা বোকামি ছাড়া আর কি ই বা হতে পারে। তাই সবাই সময় থাকতেই ভাবি। অন্যকেও ভাবতে শেখাই। ছোট ছোট চাওয়াগুলো বিশাল জীবনের ক্ষুদ্র অংশ। তাই জীবনকে খুব করে ভালবাসি । নিজে বাঁচি অন্যকে ও বাঁচিয়ে রাখি।
দেশ প্রেম, দেশের প্রতি মমতা , দায়িত্ববোধ থাকলে কখনোই ম্রিয়মান হবার কথা না বরং পূর্ণ তেজে জ্বলে উঠবার কথা । আসুন জ্বলে উঠি।
সমস্বরে বলি আমরা করোনাকে হারাবোই। আমরা সকল বিধিনিষেধ পালনে নিজেকে নিয়োজিত রাখছি এবং রাখবো । আমরা বীরের জাতি, রক্তের স্রোত বইয়ে দিয়ে দিয়ে ভাষা আনি, আবার অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা কিনি। এজাতির উন্নত মানসিকতা বা মানসিক শক্তি থাকবে না এটা ভাবা যায় না ।
পজেটিভ ভাবুন , ভাবতে থাকুন। দেখবেন জীবনের অনেক কিছুই সহজ। নেগেটিভ মানেই সব কঠিন দুর্বোধ্য । দুর্বোধ্যতাই জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে। আমরা জীবনকে যেন দুর্বোধ্য করে না তুলি সহজভাবে বাঁচতে শিখি।
লেখক:
মাসুদা তোফা
সহযোগী অধ্যাপক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ