করোনার প্রভাবে রাজশাহীর বাঘায় দাম নিয়ে হতাশায় পড়েছেন আমচাষীরা। বৃহস্পতিবার লখনা আম বিক্রি হয়েছে ৬৫০-৭৫০ টাকা প্রতি মণ।
গত মৌসুমে এ সময়ে প্রতি মণ হিমসাগর ও গোপালভোগ আম বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়। বর্তমানে আড়তে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে। ইতোমধ্যেই গোপালভোগ আম প্রায় শেষের দিকে। বর্তমানে কেনাবেচা চলছে হিমসাগর ও লখনা আম।
করোনার কারণে উপজেলার বাজার ও আড়তে আমের দামে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন আমচাষীরা। চলতি মৌসুমে আমের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি।
খরার পরে গাছে যে আম টিকে আছে, সেগুলো পোক্ত হয়েছে। চাষীরা সেই আম এখন বাজারজাত করছে। গত বছর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পোক্ত আম ব্যাপক হারে ঝরে পড়েছিল; কিন্তু এবার তা হয়নি। খরার কারণে কিছু আম পড়লেও তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে বাজারে ৪৫ কেজিতে প্রতি মণ হিসেবে আম বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে মনিগ্রামের আমচাষী জিল্লুর রহমান বলেন, এবার আমের দাম কিছুটা কম। গত মৌসুমে আঁচার ও জুস কোম্পানি প্রচুর পরিমাণে গুটি ও লখনা আম ক্রয় করেছে। কিন্তু এবার তাদের তেমন আম কিনতে দেখা যাচ্ছে না। তবে করোনার কারণে বাজারে তেমন ক্রেতা আসছে না। ফলে অন্যান্য আমের দাম গত বছরের তুলনায় অনেকটা কম।
আড়ানী গোচর গ্রামের আমচাষী মন্টু হোসেন বলেন, ১০ মণ আম গাছ থেকে পাড়তে ২ জন শ্রমিক লাগছে। শ্রমিককে দিতে হচ্ছে এক হাজার টাকা। তারপর দিতে হচ্ছে গাড়ি ভাড়া, আড়ত খরচ। ১০ মণ লখনা আম বিক্রি করে দাম পাওয়া যাচ্ছে ৬-৭ হাজার টাকা। এই আমে এবার তেমন লাভ হবে না। হিমসাগর ও গোপালভোগ আমের দাম কিছুটা ভালো আছে। তবে এসব আম গাছে কম ধরে। লখনা আমের দাম কম হলেও গাছে ধরে অনেক বেশি।
উপজেলার কলিগ্রামের মহাতাব হোসেন বলেন, আমার আমের বাগানের দাম বলেছিল এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে এই বাগানের দাম অনেক কম বলছে। আম নিয়ে কী হবে ভেবে পাচ্ছি না। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে আম নিয়ে চরম হতাশা উৎকণ্ঠায় দুশ্চিন্তায় আছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, হেক্টরপ্রতি ১৫ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন আম উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে এবার আমের উৎপাদন গতবারের চেয়ে অনেক বেশি হবে। রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় আম চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বাঘা উপজেলায় আম চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যেই এ উপজেলার আম যুক্তরাষ্ট্রে ৫ মেট্রিক টনের দুটি চালান গেছে।