দুঃখজনক হলেও সত্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্নার ঘটনায় আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্ট শাখার নেতৃবৃন্দরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। একইসঙ্গে ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্না বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সমিতির বর্তমান কমিটির প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।
আধুনিক এই সভ্যতায় সভ্যরা যেখানে একই স্থানে পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির নির্মাণ করে যার-যার ধর্মীয় প্রার্থনার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে, মানবতার এক অন্যান্য নজির তুলে ধরেছে, সেখানে সুপ্রিম কোর্ট ক্যান্টিনে গরুর গোশত রান্না নিয়ে একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে-বিষয়টি সত্যিই লজ্জার এবং প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছে।
গরুর গোশত বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বৈধ একটি খাবার। বাংলাদেশের কোনো আইনে এই গরুর গোশতকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবার স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। যুক্তরাজ্যের অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের তথ্য- গরুর গোশতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি-৬, বি-১২, মিনারেল, জিংক রয়েছে এবং এটি প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
আমার আহ্বান, যত দ্রুত সম্ভব এই ধরণের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিতর্কিত চিন্তা-ভাবনা থেকে প্রতিবাদকারীদের বের হয়ে আসা উচিত। শিক্ষিত-সভ্যদের উচিত, দায়িত্ব নিয়ে কুসংস্কার-অন্ধকার দূর করে আলো ছড়িয়ে দেওয়া। সাম্প্রদায়িক চিন্তা-ভাবনা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে একই কিচেনে চাহিদা অনুযায়ী গরু আর শুকরের মাংস দুটোই রান্না করা উচিত। যার যেটা প্রিয়, সে সেটা খাবে। কেউ কাউকে মিথ্যা বলে, জোর করে, কোনোটা খাওয়াবে না, খাবে না। বরং অপরজন যেন কোনো ধরণের সংকোচ ছাড়াই তার প্রিয় মাংস খেতে পারে—এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।