সরকারের একটি গবেষণায় দেশে ভারতীয় ধরন হিসেবে পরিচিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরীক্ষিত ৫০টি নমুনার মধ্যে ৪০টি নমুনাতেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, সংক্রমণের ৮০ শতাংশই হয়েছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে। পাশাপাশি দেশে অজানা একটি ভ্যারিয়েন্টও শনাক্ত হয়েছে।
দেশে ৮ মে প্রথম ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর করোনাভাইরাসের ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইডিএসএইচআই)।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ১৪ জন বিদেশে যাননি এবং যারা অন্যদেশে ভ্রমণ করেছেন তাদের সংস্পর্শেও আসেননি। ‘সুতরাং, বাংলাদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি সংক্রমণ হচ্ছে’, গবেষণায় দেখা গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন জানান, কমিউনিটিতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে এবং সংক্রমণ কমানোর জন্য লোকজনকে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
অজানা ভ্যারিয়েন্টটি সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ‘এর উৎস চিহ্নিত করা যায়নি। আমরা গবেষণা করছি এবং গবেষণা সম্পন্ন হয়ে গেলে বিস্তারিত বলতে পারব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ৫০টির মধ্যে মাত্র আটটি নমুনা দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত বিটা ভ্যারিয়েন্ট ছিল। একটি নমুনার স্ট্রেইন শনাক্ত করা যায়নি।
দিনাজপুর, গাইবান্ধা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ ও পিরোজপুর থেকে সংগ্রহ করা নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা ১৬টি নমুনার মধ্যে ১৫টি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং গোপালগঞ্জ থেকে সাতটি নমুনার সবগুলোর মধ্যেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
খুলনা থেকে সংগ্রহ করা তিনটি নমুনাই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট এবং ঢাকা থেকে সংগ্রহ করা চারটি নমুনার মধ্যে দুটি ছিল ডেল্টা ভেরিয়েন্ট।
গত বছরের অক্টোবরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত করা হয়। এটি ভাইরাসের আগের স্ট্রেইনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই ভেরিয়েন্টটিকে ‘উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট’ বলে অভিহিত করে।