খুলনার পাড়া মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম বৃদ্ধি পেয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোপাকুপি থেকে শুরু করে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে। সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে গত মঙ্গলবার রাতে লবনচরা থানার ছোট বান্দা বাজার এলাকায় আলামিনকে কুপিয়ে জখম করে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ আদালতে প্রেরণ করলে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলো, হেলাল শেখ, মোঃ নুর আলম, মোঃ মুরাদ শেখ, মোঃ আবির গাজী, মোঃ শাহরুক খান, মোঃ নাঈম কাজী, মোঃ মিরাজ।
মামলার বিবরণ হতে জানা গেছে, আলামিন সেভেন রিং সিমেন্ট কোম্পানীর ট্রাকের একজন হেলপার। মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে সে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হয়। আসামি হেলাল তাকে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। প্রতিবাদ করায় আসামির কাছে থাকা চাপাতি দিয়ে আলামিনকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। পরে অন্যরা তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়। আহত আলামিন এখন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে আলামিনের বন্ধুরা প্রথমে আসামি হেলালকে আক্রমণ করে। এ সময় হেলাল একা থাকায় সে ঘটনাস্থল থেকে মার খেয়ে চলে যায়। এরপর রাত ৯ টায় তারা সংঘবদ্ধ হয়ে আলামিনের ওপর হামলা চালায়।
সূত্রটি আরও জানায়, রূপসা ব্রিজ থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত পাঁচজন কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে। এরা আবার দু’টি গ্রুপে বিভক্ত। একটি গ্রুপে নিয়ন্ত্রক চারজন ও অপরটিতে একজন। চার জনের গ্রুপে রয়েছে জিন্নাপাড়ার ইয়াছিন, লবনচরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরী এলাকার গফফার, চানমারীর আশিক ও ব্রিজ এলাকার ঝিনুক রিপন। এদের প্রত্যেকের নামে খুলনার বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। এদের একজন বড়ভাই রয়েছেন। যখনই তারা বিপদে পড়ে তখন এ বড় ভাই তাদের রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। তিনি ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে চলেন। এই গ্যাং এর সদস্য সংখ্যা প্রায় তিন শ’র কাছাকাছি। আলামিন, নুর আজিম গ্রুপের সদস্য। তার সদস্য সংখ্যা প্রায় এক শ’র মতো। গ্রুপ লিডার কারাগারে থাকায় গ্রুপের সদস্যরা প্রায়ই হামলা শিকার হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা তাদের উপস্থিতির আগাম বার্তা দিচ্ছে। বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটবার আগে প্রশাসনকে সচেতন হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে এলাকাবাসী।