ফলোআপ:
ফেনীর কালিদহে শিশু তিশাকে ব্যক্তিগত পূর্ব আক্রোশের কারণে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার নিশান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিষয়টি স্বীকার করেছে।
শনিবার (০৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার। হত্যার পূর্বে ধর্ষণচেষ্টা হয়েছিল কিনা তার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে বলেও জানান তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে নিশান জানায়, সে তার মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় তার বাবা মারা যান। সে তার মায়ের একমাত্র সন্তান। দারিদ্র্যতা এবং অসহায়ত্বের দরুণ বাড়িতে অন্যান্য চাচা-জেঠারা আক্তার হোসেন নিশান ও তার মায়ের সঙ্গে কিছুটা অসৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করত। যার ফলে নিশানের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও ঘৃণার জন্ম নেয়। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ও ঘৃণার বহিঃপ্রকাশই এই ঘটনার সূত্রপাত হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার।
এর আগে, আদালত সূত্র জানায় শুক্রবার (৭ মে) বিকেলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফেনী সদর আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহাম্মেদ ১৬৪ ধারায় নিশানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তিশার পরিবারের উপর ব্যক্তিগত পূর্ব আক্রোশের কারণে তিশাকে হত্যা করছে বলে আদালতকে জানিয়েছে নিশান। এ ঘটনায় ওই দিন সকালে নিহত তিশার ভাই আশ্রাফুল ইসলাম হাসনাত বাদী হয়ে তার চাচাতো ভাই নিশানকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই নিশানের দেখানো মতে তিশাকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি তিশার বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের আলী ভুঞা বাড়ির সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলামের ছোট মেয়ে তানিশা ইসলাম তিশাকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় দাদীর কাছে রেখে তার মা ও বোন পাশের বাড়ি যান। ঘণ্টা দেড়েক পর তারা বাসায় তিশা না পেয়ে মা ছাদের দিকে খুঁজতে যান। সেখানে সিঁড়ি ঘরে তার মেয়ে তিশার গলাকাটা লাশ দেখেন।
পরে খবর পেয়ে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একজোড়া স্যান্ডেলের সূত্র ধরে তিশার জেঠাতো ভাই মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নিশানকে আটক করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশনায় নিশানকে ঢাকায় কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এ জাতীয় আরো খবর..