সরকারি ত্রাণের মাত্র ৪৫০ টাকা আনতে গিয়ে হাতের আঙুল হারালেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার রিনা বেগম (৩৬) নামের এক গৃহবধূ।
রিনা বেগমের হাতের আঙুল ইউনিয়ন পরিষদের দরজার ফাঁকে আটকে যাওয়ার পর চৌকিদার দরজা বন্ধ করে দেন। এতে করে তার ডান হাতের একটি আঙুল কাটা পড়ে।
বৃহস্পতিবার (০৬ মে) দুপুরে বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এ ঘটনা ঘটে। রিনা ওই ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি আছেন রিনা।
রিনার পরিবার পরিজনরা জানান, গত ছয় থেকে সাত মাস আগে রিনার সঙ্গে তার স্বামী ফজল মিয়ার ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর থেকে তিনি স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই আছেন। রিনার বাবা মারা যাওয়ার পর তার ভাই জসিম মিয়া সংসারের হাল ধরেন। রিনা ও তার মেয়ের ভরণপোষণও জসিমই দেন।
অসহায় ও দুস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সহায়তার ৪৫০ টাকা আনতে দুপুরে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান রিনা। টাকা নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানোর পর তাকে পেছন দিক থেকে কেউ একজন ধাক্কা দিলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের দরজায় গিয়ে পড়ে যান। এ সময় রিনার ডান হাত দরজার ফাঁকে আটকে যায়। তখন দরজায় থাকা চৌকিদার মনে করেন রিনা জোর করে ভেতরে ঢুকে পড়ছেন। এ সময় চৌকিদার রিনার হাত আটকে থাকা অবস্থাতেই দরজা বন্ধ করে দেন।
এতে তার হাতের একটি আঙুল পুরোপুরি এবং আরেকটি আংশিক কাটা পড়ে। পরে রিনার স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত রিনা বলেন, আমি চৌকিদারকে অনেক মিনতি করে বলেছি- ভাই আমার হাত আটকে গেছে, দরজাটা খোলেন। কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি। পরে আমার কাটা আঙুল ঢিল মেরে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সারওয়ার রহমান ভূইয়া বলেন, টাকা বিতরণের সময় আমি ছিলাম না। শুনেছি কার আগে কে টাকা নেবে, সেটা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তখন চৌকিদার দরজা লাগাতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। দরজায় যে ওই নারীর হাত আটকে ছিল, সেটি চৌকিদার দেখেননি। ওই নারীর চিকিৎসার খরচ ইউনিয়ন পরিষদ বহন করবে।
এ জাতীয় আরো খবর..