রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপির সভাপতি কথিত প্রিন্সিপাল লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে জমি দখলের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রিন্সিপাল না হয়েও নামের আগে প্রিন্সিপাল পদবী ব্যবহার করে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে চান সম্মানীয় স্থানে। তিনি নিজের জায়গায় নন এমপিওভূক্ত একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে রাতারাতি বনে গেছেন প্রিন্সিপল। আর এই কথিত প্রিন্সিপল পদবী ধারণের আড়ালে রয়েছে এক ভূমি খোকো লিয়াকতের গল্প। এমনই অভিযোগ করেছেন ভূক্তভূগীরা।
ভূক্তভূগী নুরুল আমিন প্রামানিক জানান, তাদের জমি অন্যদের দিয়ে মামলা করিয়ে দিনের পর দিন হয়রানী করছেন। যদিও প্রকাশ্যে কোথায়ও লিয়াকত নেই। কিন্তু, পিছন থেকে নাটাই ঘুরাচ্ছেন লিয়াকত। প্রকাশ্যে সবাইকে বলছেন এই জমির প্রকৃত মালিক নুরুল আমিন প্রামানিকরাই। কিন্তু, ৫০ বছরের অধিককাল আগে যারা বিক্রি করে গেছে, তাদের ওয়ারিশদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে দিনের পর দিন হয়রানী করেছেন। এমন কি তাদের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে হয়েছে। মামলায় আমাদের জয় হওয়ার পর লিয়াকত নানাভাবে হুমকী ধামকী দিয়েই যাচ্ছে।
নুরুল আমিন প্রামানিক আরো জানান, আমরা অসহায় ৪৫ জন মানুষ দিনের পর দিন লিয়াকত সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী হয়ে আছি। তিনি আমাদের জমিতে যেতে হলে তাকে টাকা দিলে বুঝিয়ে দিবে জানায়। যদিও, এখানে তার কোন জায়গা নেই।তবুও বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিয়ে জমি বুঝে নিয়ে ৭০ লাখ টাকার মাটি ফেলি। পরবর্তীতে লিয়াকত গং আমাদের কাছে রাস্তার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে অন্য লোক দিয়ে আমাদের নামে মামলা করে দেয়। দীর্ঘ ৮-১০ বছর একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেন। মামলায় আমাদের পক্ষে রায় হওয়ার পর এখন বলছে সরকারী ৭৪ শতাংশ (কোড অফ ওয়ার্টেস এর) যে জায়গা রয়েছে, সেখানে নাকি আমাদের জমি!
লিয়াকত সম্পর্কে আরেক ভূক্তভূগী আলাউদ্দিন জানান, আমাদের পূর্বপুরুষের জায়গা বাউন্ডেরী দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছে। তার সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগাযোগ আছে। আমাদের বলছে স্থানীয়ভাবে বিষয়টা সমাধান করবে। কিন্তু, তাও না করে, আমাদের বিভিন্ন হুমকী-ধামকীর উপর রেখেছে। আমাদের এখন খুব সাবধানে চলাচল করতে হয়। নয়তো যে কোন সময় আমাদের জীবনের উপর হুমকী রয়েছে। তার ভয়ে মোবাইল পর্যন্ত বন্ধ করে রাখতে হয়।
তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসী শাহআলম, মিজান, লিটন, মনির, কাজলসহ আরো অন্তত ১৫/২০জনের একটি বিশাল সিন্ডিকেট দিয়ে সাধারন মানুষের ভূমি জোর জবর দখল করা বাহিনি রয়েছে তার। তাদের দিয়ে সাধারন মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অন্যের জায়গায় বাউন্ডারি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগীরা।
রাশেদুজ্জামান নামের কথিত এক লোককে দিয়ে ১.৮৭কাঠার একটি দলিল প্রস্তুত করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন এই ভূমিদস্যু লিয়াকত।
তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যে অভিযোগ সেটি হচ্ছে আলাউদ্দিন গংদের সম্পত্তি নাসির উদ্দিন সবুজের মাধ্যমে স্থানীয় লোকদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে স্বাক্ষী বানিয়ে জাল দলিল করে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন এই ভূমিদস্যু লিয়াকত আলী।
আরো জানা যায়, স্থানীয় বিমান বাহিনির এক অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তাও তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার কেনা ১দাগের জমি তাকে অন্য দাগে দিয়ে সরকারি প্রায় ৮কাঠা জায়গা রাতের আধারে দখল করে নেন ভূমিদস্যু লিয়াকত।
জানা যায়, এই কথিত প্রিন্সিপাল লিয়াকত আলীর কোন সম্পদ এখানে নাই। অথচ তিনি এখানে রাম রাজত্ব কায়েম করছেন।গোপনে সখ্যতা রেখেছেন আন্ডারওয়াল্ডের সাথে। যাদেরকে দিয়ে তিনি এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতা ও প্রশাসনের সাথে সখ্যতা রেখে প্রিন্সিপাল লিয়াকত সাধারন মানুষের সম্পদ দখল করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান।
কেউ প্রতিবাদ করলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদেরকে হামলা, মামলা ও নির্যাতন পোহাতে হয়। যার কারনে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। ভদ্রতার মুখোশ পড়ে অন্ধকার জগতের বাসিন্দা এই কথিত প্রিন্সিপাল লিয়াকত বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক। এই বিষয়ে জানার জন্য তার মোবাইলে কল করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।সুত্র:বা:দি।