চলতি বছরে ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের নিয়ে শুরু হল জরিপ, পূর্বাভাস আর জনপ্রিয়তায় কে এগিয়ে। নভেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদের প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন। আর তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য গণমাধ্যমসহ বেশ কিছু জরিপ প্রতিষ্ঠান বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই ভাইস প্রেসিডেন্ট জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন। সর্বশেষ রোববার এবিসি নিউজ ও ওয়াশিংটন পোস্টের যৌথ সমীক্ষার ফলাফলে বলা হয়েছে, দেশের শহরতলী এলাকায় নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে জো বাইডেনের ৫৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। ট্রাম্প সেক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে, মাত্র ৪০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে তার। আর এসব এলাকায় সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় ট্রাম্প ৪৪ শতাংশ আর বাইডেন ৫৪ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।
গত সপ্তাহে এনবিসি নিউজ, ওয়ালষ্ট্রিট জার্নাল ও কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ও এ নিয়ে জরিপ করেছিল। সবগুলোর ফলাফলেই বাইডেনের চেয়ে দুই অংকে পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে মনমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে পেনসিলভানিয়া স্টেটের শহরতলী অঞ্চলে বাইডেনের সমর্থন ৫৩ আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪০ শতাংশ। ফিলাডেলফিয়ায় ট্রাম্পের সমর্থন ৩৫ আর বাইডেনের সমর্থন ৫৪ শতাংশ। আগের জরিপগুলোতেও ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেন অনেক এগিয়ে ছিলেন। গত মাসে কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৩৪ শতাংশ বিপরিতে বাইডেনের জনপ্রিয়তা ৫৬ শতাংশ। ফক্স নিউজের এক জরিপেও বাইডেন ৫৫ শতাংশ আর ট্রাম্প মাত্র ৩৩ শতাংশ সমর্থন পেয়েছিলেন। এছাড়া জুনের প্রথম দিকে সিএনএনের এক জরিপে ১৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। সাম্প্রতিক জরিপগুলো বলছে, শহরতলী অঞ্চলে ভোটারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন বাইডেন। এই সমর্থন অর্জনের ক্ষেত্রে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্যও ঐতিহাসিক ব্যবধানে সাফল্য দেখিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের সমর্থনের চেয়ে বর্তমানে বাইডেনের সমর্থন ২০ পয়েন্ট বেশি। আর অতীতে গেলে দেখা যাচ্ছে, শহরতলী অঞ্চলে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীর সমর্থন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ৫ শতাংশের বেশি ছিল না। এক্ষেত্রে বারাক ওবামার সমর্থন ছিল তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে মাত্র ২ পয়েন্ট বেশি। সেই তুলনায় বাইডেনের সমর্থন অনেক বেশি, বলাই বাহুল্য। যাই হোক, শহরাঞ্চলের বাইরে ভোটারদের মধ্যে জো বাইডেনের এমন সমর্থন দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
এই ভোটাররা শহরের ভোটারদের মধ্যেও আলোড়ন তুলে থাকেন। কিংবা বলা যায়, শহরের ভোটারের চেয়ে শহরের বাইরের ভোটাররাই ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার বড় নিয়ামক। সুতরাং বলা হচ্ছে, শহরতলীর ভোটার ভোটের মাঠের আয়না। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মহামারিতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি মহামারি এই ভাইরাসে সংক্রমণ ও প্রাণহানিতে অন্যান্য যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শীর্ষে রয়েছে। সামনে ভোটের কথা চিন্তা করে দেশের অর্থনীতি বাঁচানোর নামে লকডাউন তুলে নিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাতে কাজের কাজ তো হয়ইনি, হয়েছে উল্টোটা।
তাই সাম্প্রতিক জরিপগুলোর ফল উল্টে দিতে শহরতলীতে রিপাবলিকানদের আরও অনেক বেশি নজর দিতে হবে। নইলে ট্রাম্পের কপালে এক টার্মই লেখা থাকবে। -সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট অবলম্বনে।