1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই

নাগরিক অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৮০ বার পঠিত

প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ আর নেই। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কলকাতার নিজের বাসায় ৮৯ বছর বয়সে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে বাংলা কবিতার এক যুগের অবসান, বাংলা সাহিত্যের এক যুগের অবসান হলো।

এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কবি। কয়েক মাস ধরে নানা শারীরিক নানা সমস্যায় কাতর ছিলেন। গত ২১ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালেও ছিলেন কয়েক দিন। বাসায় ফিরে চিকিৎসার মধ্যেই ছিলেন। এই আবহে কিছুদিন আগে জ্বর আসে শঙ্খ ঘোষের। সঙ্গে পেটের সমস্যা দেখা দেয়। এরপর তাঁর করোনা টেস্ট করা হয়। ১৪ এপ্রিল বিকেলে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। তাই কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। ক্রমেই তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমছিল। একসময় তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন কবি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজে শঙ্খ ঘোষের ছোট মেয়েকে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন। প্রচারসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শঙ্খ ঘোষ কোভিডে আক্রান্ত হলেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য হবে। তবে কবি নিজে আড়ম্বর পছন্দ করতেন না বলে গানস্যালুটের আয়োজন থাকবে না।                শঙ্খ ঘোষের আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। তার বাবা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মা অমলা ঘোষ। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান চাঁদপুর জেলায় তাঁর জন্ম। বংশানুক্রমিকভাবে পৈতৃক বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়। তবে শঙ্খ ঘোষ বড় হয়েছেন পাবনায়। বাবার কর্মস্থল হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর পাবনায় অবস্থান করেন এবং সেখানকার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫১ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।   কর্মজীবনে শঙ্খ ঘোষ যাদবপুর ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে কবিকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ায় ‘রাইটার্স ওয়ার্কশপ’-এও শামিল হন। তাঁর সাহিত্য সাধনা এবং জীবনযাপনের মধ্যে বারবার প্রকাশ পেয়েছে তাঁর রাজনৈতিক সত্তা। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে বারবার তাঁকে কলম ধরতে দেখা গেছে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিজের মতো করে। ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি।                                                      বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষের অবদান অপরিসীম। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবেও তাঁর নামডাক ছিল। ‘ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থ। ‘শব্দ আর সত্য’, ‘উর্বশীর হাসি’, ‘এখন সব অলীক’ উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ। তাঁর লেখা ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’, ‘জন্মদিনে’, ‘আড়ালে’, ‘সবিনয়ে নিবেদন’, ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’ বছরের পর বছর দুই বাংলায় চর্চিত, জনপ্রিয়।   ২০১৯ সালে প্রথমা প্রকাশন থেকে রের হয় ‘সন্ধ্যানদীর জলে: বাংলাদেশ’। ‘সন্ধ্যানদীর জলে’ বইটি মূলত বাংলাদেশ প্রসঙ্গেই নানান সময়ে লেখা তাঁর স্মৃতিকথা, ভ্রমণপঞ্জি ও অন্তরঙ্গ বিশ্লেষণময় লেখাগুচ্ছের সংকলন। ‘একুশে, একাত্তর ও নববর্ষ’, ‘ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান’, ‘গানের ভিতর দিয়ে’, ‘শিক্ষা আন্দোলন’ ও ‘স্মৃতি, ভ্রমণ’—এই পাঁচটি পর্বে বিভক্ত হয়েছে বইটি।              দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থটির জন্য তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে কন্নড় ভাষা থেকে বাংলায় ‘রক্তকল্যাণ’ নাটকটি অনুবাদ করেও সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া রবীন্দ্র পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতীর দ্বারা দেশিকোত্তম সম্মানে এবং ২০১১ সালে ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হন শঙ্খ ঘোষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com