একসময় রিকশাচালক আর বাদাম বিক্রেতা। এরপর যেন আলাদিনের চেরাগের স্পর্শে বনে যায় কোটি কোটি টাকার মালিক। বলছি ‘এরশাদ-আমিনুল ব্রাদার্স’-এর কথা। প্রতারণার মাধ্যমে লাখ টাকার সম্পদকে কোটি টাকা দেখিয়ে নিয়েছেন ৩০০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ। এই দুই সহোদর এখন অন্তত ৫০০ কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাদের প্রতারণার জাল রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে শুধু অবৈধ সম্পদ, জালিয়াতি বা প্রতারণা নয়, অর্থপাচারের অভিযোগেরও প্রমাণ মিলেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
এরশাদ আমিনুল ব্রাদার্স”, একসময়ের রিকশাচালক, বাদাম বিক্রেতা। এখন এই দুই ভাইয়ের সম্পদের পাহাড় রয়েছে ঢাকায় একাধিক বাড়িসহ গাজীপুর, সাভার, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে অঢেল স্থাবর-অস্থার সম্পদ। কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন তারা। ঢাকায় রয়েছে ইট বালু সিমেন্টের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার সাধুর মোড়ে বিলাসবহুল বাড়ি। রাজশাহীর ভদ্রা, নওদাপাড়া আমচত্বর এলাকায় এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনসহ একাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের। রাজশাহী শহরেই ৩০ বিঘা জমির মালিক। ব্যাংকের কাগজপত্রে বিঘাপ্রতি ১৫ লাখ টাকার জমি হয়ে যায় কোটি টাকা! দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলে যার অনেক সাইনবোর্ডই রাতারাতি তুলে নেন দুই ভাই।
দুদকে আসা অনুসন্ধানের তথ্যমতে, সব সম্পদই এরশাদ আমিনুল করেছেন জালিয়াতি করে। লাখ টাকার সম্পদ কোটি টাকা দেখিয়ে ব্যাংকঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে এবি ব্যাংকের মামলায় গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে দুই ভাই। অন্যদিকে দুদকের অভিযোগে দুই সহোদরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও ব্যাংকঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচারের অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছে দুদক।
দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, এরশাদ আলীসহ তার পাঁচজন সহযোগী অদ্যো মাল্টিপারপাসের নাম করে দুটি চাইনিজ কোম্পানির নাম করে পাঁচটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার সৃষ্টি করে। আর উক্ত ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ঋণ প্রদান দেখিয়ে ১১৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সুদ আসলে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৪ কোটি টাকার ওপরে।
এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের নাম থেকে রাজধানীর বনানীর এসএইচএল রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে বালু সিমেন্ট দেওয়ার কথা বলে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন দুই ভাই। চট্টগ্রামে ইট বালু সিমেন্টের ব্যবসার ৮ কোটি টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জেলও খাটেন আমিনুল।
এ জাতীয় আরো খবর..