সদ্যজাত সন্তান ও স্ত্রীকে ফেলে লাপাত্তা স্বামী। খোঁজ মেলার পর অস্বীকার করলেন তাদের অস্তিত্ব। অধিকার আদায়ে মা গেলেন আদালতে। ডিএনএ পরীক্ষায় সন্তানের পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কোর্ট-কাচারিতেই কেটে গেছে পাঁচটি বছর। মায়ের হাত ধরে ছোট্ট রাফি এখনো ঘুরছে আদালতের দ্বারে দ্বারে।
ভালোবেসে ইকবাল হোসেন বাবুকে বিয়ে করেন ফরিদপুরের সুখী আক্তার। বিয়ের চার বছর পর কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে এক সন্তান। নাম রাখেন ইমরান হাসান রাফি।রাফির আগমনের পর অদৃশ্য কারণে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তার বাবা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছে তিনি। অস্বীকার করে বসেন আগের বিয়ে ও সন্তানকে।
রাফির বয়স এখন ৫ বছর। বাবার স্বীকৃতি চেয়ে মায়ের হাত ধরে ঘুরছেন আদালতের দ্বারে দ্বারে। বাবা ইকবাল হোসেন বাবু প্রথমে রাফিকে নিজের সন্তান মানতে নারাজ। মামলা গড়ায় আদালতে। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, ইকবাল হোসেনই রাফির বাবা। এবার সন্তানকে স্বীকার করলেও স্ত্রীকে অস্বীকার করে বসেন পাষণ্ড স্বামী।
স্ত্রী সুখি আক্তার বলেন, বাচ্চাটা ২৪ মে জন্ম নেয়। ২৫ মে হাসপাতালে আসেন তিনি। পরে দেখে চলে যান। আর আসেনি।ভুক্তভোগী এই নারী জানান, সন্তানের জন্য আইনি লড়াই করতে করতে তিনি এখন নিঃস্ব প্রায়। সঙ্গী এখন সামাজিক নানা বঞ্চনা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুখি বলেন, আমরা ছেলে আমাকে বলে আমার আব্বু কি নাই, এ জিনিসগুলো খুবই কষ্ট লাগে। আদালতে টাকা ছাড়া মানুষ কিছুই চিনে না। এখানকার মানুষগুলো খুবই নোংরা। কারোর মনে মায়া মমতা নেই।ছোট্ট রাফি এখনো জানে না বাবার আদর কি। বাবা যেন থেকেও নেই। জন্মের পর বাবাকে শুধু দেখেছে আদালতের কাঠগড়ায়। এ বিষয়ে জানতে রাফির বাবাকে ফোন করা হলে তিনি জানান, তিন লাখ টাকার বিনিময়ে রফাদফা করছেন তারা। সেই প্রক্রিয়াই চলছে।অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন বাবু বলেন, যেহেতু ডিএনএ রিপোর্টে পজিটিভ এসেছে। আমরা সেই অনুযায়ী মীমাংসা করছি।
যেখানে সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের জন্য বছরের বছর আইনি লড়াই করে এবং পিতৃ পরিচয় প্রমানিত হয়, সেখানে স্বামী কিভাবে স্ত্রীকে স্বীকার করছে না ।সন্তানের পিতৃপরিচয়ের জন্য মায়ের এমন অমানুষিক আইনি লড়াই বিস্মিত করে সবাইকে। কে পাশে দাড়াবে অবুঝ শিশু ও তার মায়ের পাশে।
এ জাতীয় আরো খবর..