1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রানা, ও মেহেবুব হোসেন রিপনের নেতৃত্বে এক বিশাল র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সিপিজের খোলা চিঠি ড. ইউনুসকে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম গ্রেফতার শপথ নিলেন নতুন তিন উপদেষ্টা কু‌মিল্লায় ডাকাতির নাটক সাজিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতিজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ক‌রে চাচা রাজধানীর কাকরাইলে সভা সমা‌বেশ নি‌ষিদ্ধ

কু‌মিল্লায় যুবলীগ নেতা জামাল হত্যার ঘটনায় বোরকা প‌রি‌হিত দে‌লোয়োরসহ গ্রেফতার ২

এমইএস/নাগরিক ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ মে, ২০২৩
  • ৩৯৫ বার পঠিত

কুমিল্লার গৌরীপুরে চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যাকান্ডে বোরকা পরিহিত তিনজনের মধ্যে একজন হত্যাকারীসহ আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ , সিপিসি-২ সদস্যরা।

গ্রেফতার হওয়া দুইজন হলেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চর চারুয়া গ্রামের মৃত. জাহেদ আলীর ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন @ দেলু (৩১) এবং তিতাস উপজেলার বড় গাজীপুর গ্রামের মো: ফজলুল হকের ছেলে মোঃ সাহিদুল ইসলাম @ সাদ্দাম মাস্টার (৩৩)। এর মধ্যে সাদ্দাম কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন @ দেলু এর বিরুদ্ধে ২ টি হত্যা মামলা সহ মোট ৬ টি মামলা রয়েছে।


র‌্যাব জানায়, গত ৩০ এপ্রিল রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার সংলগ্ন মসজিদের পাশে একটি দোকানের সামনে তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জামাল হোসেন (৪৫) এর উপর রাত ৮ টায় ৩ জন বোরকা পরিহিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী এলোপাথাড়িভাবে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় গত ২ মে নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-১১ চল‌তি মা‌সের ৬ মে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় ০৩, ০৪ ও ০৭ নং আসামীদেরকে গ্রেফতার করে দাউদকান্দি থানায় হস্তান্তর করে। এই হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত বাকি আসামীদেরকে গ্রেফতারের নিমিত্তে র‌্যাব-১১ মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চলমান রাখে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ মে বিকালে ও রাতে পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্য, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে এই হত্যাকান্ডে বোরকা পরিহিত তিনজন হত্যাকারীর একজন মোঃ দেলোয়ার হোসেন @ দেলু এবং তিতাস উপজেলার গাজীপুর এলাকা হতে এই হত্যাকান্ডে আসামীদের দেশের ভিতরে ও বাহিরে পলায়ন করার পথ তৈরীকারী মোঃ সাহিদুল ইসলাম @ সাদ্দাম মাস্টারকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী দেলোয়ার হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, গত ৩০ এপ্রিল বিকালে জিয়ারকান্দি এলাকায় অবস্থিত মাছের প্রজেক্টে (প্রজেক্টের মালিক আরিফ ও সুজন) কাজ করাকালীন আরিফ (জামাল হত্যা মামলার ২ নং এজাহারনামীয় আসামী) তাকে গৌরীপুর পাওয়ার হাউজে নিয়ে যায় এবং সেখানে যাওয়ার পর সে একটি কালো মাইক্রোবাস (ড্রাইভারসহ), আসামী মনির (এজাহারনামীয় ০৯ নং আসামী) ও শাহ আলী@ আল আমিনকে (পিতা-আবু মিয়া, সাং-জিয়ারকান্দি, গৌরীপুর) দেখতে পায়। পরবর্তীতে আরিফ দেলোয়ারকে বলে ‘আজ আমরা জামালকে হত্যা করব, জামাল পূর্বে আমার ও তোর অনেক ক্ষতি করেছে, বেচে থাকলে আমাদের আরো ক্ষতি করবে, আমাদের ভয়ের কিছু নেই, আমরা সম্পূর্ণ পরিকল্পনানুযায়ী কাজ করব এবং কাজ শেষে কিছু দিনের জন্য কুমিল্লার বাহিরে থাকবো। এছাড়া এ কাজ শেষে তোর ঋণ পরিশোধ ও পরিবার চালানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে’। গ্রেফতারকৃত আসামী দেলোয়ার টাকার প্রয়োজনে আরিফের কথায় প্রলোভিত হয়ে ও শত্রæতার নিষ্পত্তির নিমিত্তে সে জামালকে হত্যার জন্য রাজি হয়ে যায় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়ার হাউজে অবস্থান করতে থাকে। আরিফ ও শাহ আলী গাড়ি থেকে নেমে মোবাইল ফোনে কয়েকজনকে ফোন দিয়ে নির্দেশনা প্রদান করে তবে এ ব্যাপারে আসামী দেলোয়ারকে তারা কিছুই বলে না। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আনুমানিক রাত সাড়ে ৭ টার দিকে আরিফ একজন সিএনজি চালককে ফোন দিয়ে পাওয়ার হাউজের সামনে নিয়ে আসে। এসময় আরিফ নিজে একটি পিস্তল নেয় এবং দেলোয়ার ও কালা মনিরকে একটি করে পিস্তল দেয়। পরবর্তীতে দেলোয়ার, আরিফ ও কালা মনির বোরকা পরে পিস্তলসহ সিএনজিতে উঠে গৌরীপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং তারা শিকদার মেডিকেলের পার্শ্ব রাস্তা (গৌরীপুর বড় মসজিদ রোড) দিয়ে কিছুদুর গিয়ে সিএনজি থেকে নেমে হাটা শুরু করে। পথিমধ্যে আরিফ কয়েকজনকে ফোন করে জামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং প্রতিনিয়ত ফোনে তাদেরকে জামালের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে বলে। ঘটনাস্থলে আসার পর আসামীরা জামালকে দেখতে পায় এবং গুলি করে দ্রæত পালিয়ে যায়। পালানোর সময় আরিফের বোরকার মুখের আবরণ খুলে যায় এবং মনিরের হাত থেকে পিস্তল পড়ে যায়। পরবর্তীতে মনির পিস্তলটি কুড়িয়ে পালিয়ে যায়। তারা তাদের পরিহিত বোরকাগুলো খুলে বালির মাঠের একটি ঝোপের মধ্যে রেখে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক গৌরীপুর মা মটরস এন্ড সার্ভিসিং সেন্টার এর সামনে চলে যায় যেখানে শাহ আলী আগে থেকেই মাইক্রোবাস নিয়ে অপেক্ষা করছিল। পরবর্তীতে তারা গাড়ীতে করে চান্দিনায় চলে আসে। চান্দিনায় আসার পর আরিফ তার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তির নিকট হত্যাকান্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র হস্তান্তর করে এবং ঐ ব্যক্তির ভাড়াকৃত মাইক্রোবাসে করে আরিফ, কালা মনির, দেলোয়ার ও শাহ আলী নোয়াখালী চলে যায়। গত ০১ মে তারিখ তারা ঐ ভাড়াকৃত মাইক্রোবাসে করে চান্দিনায় আসে এবং বিপদের আচ করতে পেরে পুনরায় নোয়াখালী চলে যায়। নোয়াখালীতে অবস্থানকালীন সময় গত ২ মে সকালে মনির তাকে জানায় আরিফ বিদেশ চলে গেছে। পরবর্তী দিন গত ০৩ মে গ্রেফতারকৃত আসামী সাদ্দাম একটি গাড়ি ভাড়া করে তিতাস থেকে নোয়াখালীতে আসে এবং কালা মনির, দেলোয়ার ও শাহ আলীকে নিয়ে ফেনীতে চলে যায়। শাহ আলীকে ফেনী থেকে ঢাকার একটি বাসে তুলে দিয়ে তারা নরসিংদীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পথিমধ্যে সাদ্দাম হোমনায় নেমে যায় এবং দেলোয়ার ও মনির নরসিংদীতে দেলোয়ারের খালার বাসায় পৌছায়। গত ৪ মে ভাড়াকৃত গাড়ীতে করে দেলোয়ার ও মনির উত্তরায় চলে আসে। পরিকল্পনা মোতাবেক সাদ্দামের ভাড়া করা অন্য একটি গাড়ি আসামীদ্বয়কে উত্তরা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে নিয়ে আসে এবং সাদ্দামের ভাড়াকৃত চালক দেলোয়ারকে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে পূর্বে হতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থানরত অন্য একটি গাড়িতে করে মনির চলে যায় ও দেলোয়ার সোনারগাঁওতে তার বোনের বাসায় রাত্রী যাপন করে। গত ৫ মে রাতে দেলোয়ার তার মায়ের সাথে দেখা করার জন্য কুমিল্লায় আসে এবং মায়ের সাথে দেখা শেষে পুনরায় ঢাকার সোনারগাঁওতে তার বোনের বাসায় প্রত্যাবর্তন করে। গত ৬ মে দেলোয়ার তার বোনের বাসা থেকে শনির আখড়ায় তার খালার বাসায় চলে যায় এবং ৯ মে বিকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে। এর মধ্যে গত ৮ মে দেলোয়ার সাদ্দামকে টাকার জন্য ফোন দিলে সাদ্দাম দেলোয়ারকে বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। নিজের পাসপোর্ট না থাকা ও পরিবারের ভরণপোষণের জন্য টাকার প্রয়োজনে দেলোয়ার সাদ্দামের নিকট ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে। একই অবস্থানে বেশি দিন থাকলে গ্রেফতার হতে পারে এই ভয়ে সে ৯ তারিখ বিকালে তার খালার বাসা থেকে বের হয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থায় করে। এসময় আমরা তাকে গ্রেফতার করি। পরবর্তীতে একই দিন রাতে দেলোয়ারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত অন্য আসামী সাদ্দাম জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, জামাল হত্যাকান্ডের ঘটনা সম্পর্কে সে অবগত ছিল না। হত্যাকান্ডের পর গত ১ মে শাকিল (এজাহারনামীয় ৬ নং আসামী) তাকে ফোন দিয়ে আসামীদেরকে পলায়নের ব্যাপারে সাহায্য চাইলে সে শাকিলকে সাহায্য করতে রাজী হয়। এরই প্রেক্ষিতে সাদ্দাম গত ৩ মে নোয়াখালী যায় এবং আসামীদের নিয়ে ফেনীতে এসে শাহ আলীকে ঢাকার বাসে তুলে দিয়ে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং পথিমধ্যে সে হোমনায় নেমে যায়। গত ৪ মে আসামী দেলোয়ার ও কালা মনির তারা ভাড়াকৃত গাড়িতে করে উত্তরা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যায় এবং তার ড্রাইভার দেলোয়ারকে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করে। এছাড়াও শাকিলের নিকট হতে টাকা নিয়ে আসামী দেলোয়ারকে টাকা প্রদান করবে বলে জানায়। উল্লেখ্য যে, শাহ আলী (পাসপোর্টে নাম আল-আমিন) গত ৩ মে ৫৮৭ বিমানযোগে দুবাই এর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে দাউদকান্দি থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com