ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রীড়াবিদদের ক্রীড়াশৈলীর সুনিপুণ প্রদর্শনী ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এক জমকালো আয়োজনে আজ পালিত হলো ডিএমপির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২২।
আজ সোমবার (২১ মার্চ ২০২২) বিকেলে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ডিএমপির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর সভানেত্রী মিসেস জীশান মীর্জা। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলা ৩:৩০টায় ইন্সপেক্টর জেনারেল রঙ-বেরঙের বেলুন উড়িয়ে ডিএমপির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২২ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তারপর দুইজন ক্রীড়াবিদের মশাল প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে খেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১০০ মিটার দৌঁড় (পুরুষ ও নারী), বালিশ যুদ্ধ, সুরের তালে তালে বালিশ বদল, ১০০ মিটার হাঁটা, বেলুন ফুটানো ও যেমন খুশি তেমন সাজ প্রতিযোগিতাসহ মোট ১৯টি ইভেন্টে খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও ডিএমপির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অন্যান্য ইভেন্টের মধ্যে ছিল ২০ মিটার হেঁটে হাড়ি ভাঙ্গা, ছোট্ট বালক-বালিকাদের ৫০ মিটার দৌঁড়, পেনাল্টি শ্যুট আউট, ডার্ট থ্রো ও অবজারভেশন টেস্ট।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ শেষে আইজিপি বলেন, “আজকের এই আয়োজন ছিল অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও স্বতঃস্ফূর্ত। সর্বোপরি সাজসজ্জাসহ সার্বিক পরিচালনা ছিল সুশৃঙ্খল ও সুসংবদ্ধ। এই জন্য আমি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ সকল স্তরের কর্মকর্তাদের আন্তরিক মোবারকবাদ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি”।
খেলাধুলার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের পুলিশ সদস্যদের সবসময় ফিট থাকতে হয়। আমাদের কাজ যেমন বুদ্ধিবৃত্তিক আবার এই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজটাকে সম্পূর্ণ করার জন্য শারীরিক যোগ্যতারও প্রয়োজন। আর সেকারণে আমরা সবসময় আমাদের ফিটনেসকে গুরুত্ব দেই। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আমাদের ফিটনেস ধরে রাখতে সহযোগিতা করে। খেলাধুলার মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ আছে, আর আমরা একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। এই ক্রীড়া চর্চা আমাদের শৃঙ্খলা চর্চা রপ্ত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে”।
তিনি আরো বলেন, “আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমাদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাই। আমি খুব খুশি হবো যদি আমাদের মধ্য থেকে কেউ জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যদি একজনকেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলাতে পারি তাহলে সেটা বাংলাদেশ পুলিশের ব্র্যান্ডিং হবে”।
মেধাবী খেলোয়াড় বাছাই করে তাদের প্রশিক্ষিত করার জন্য কমিশনারকে পরামর্শ প্রদান করেন আইজিপি। যারা দক্ষ তাদের দেশে ও দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ করানোরও পরামর্শ প্রদান করেন এবং এক্ষেত্রে পুলিশ সদরদপ্তরের পক্ষ হতে যথাসাধ্য সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অফিসিয়াল ব্যস্ততার মাঝেও আইজিপি মহোদয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় উপস্থিত হয়ে খেলা উপভোগ করেছেন, আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যার কারণে আমরা তৃপ্ত। শুধু ক্রীড়াক্ষেত্রে না আমরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, মানুষের সেবা করতে চাই। এই মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে আইজিপি স্যারের স্নেহে থাকতে চাই, বিশ্বাসে থাকতে চাই। সবাই মিলে নগরীর প্রতিটি মানুষের পাশে যেন দাঁড়াতে পারি সেই প্রত্যাশা রাখছি।
ডিএমপির বার্ষিক এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ঢাকাস্থ বিভিন্ন পুলিশ ইউনিট প্রধানগণ ও পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ পুলিশ পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।