ইরান ইস্যুতে আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে একা হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রধান মিত্রও ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও অভিযোগ করেছেন, ইউরোপ ইরানের পাশে অবস্থান নিচ্ছে। অন্যদিকে রাশিয়া এবং চীন তো আগে থেকেই ইরানের পক্ষে। ফলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরান বরং যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে উপহাস করেছে। খবর ডয়চেভেলে ও রয়টার্সের।
ইরানের ওপর জাতিসংঘের যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা নতুন করে চালু করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন মরিয়া। রাশিয়া এবং চীন ছাড়া ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন জানাননি।
দুই বছর আগে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে আসার পর ট্রাম্প প্রশাসন সেই চুক্তির দোহাই দিয়ে ইরানের ওপর অস্ত্র বিক্রিসহ যাবতীয় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলো এক্ষেত্রে আমেরিকার প্রস্তাব মানতেই প্রস্তুত নয়। তাছাড়া ইরান সরাসরি চুক্তি লঙ্ঘন করছে, এমন অভিযোগও মানছে না বাকি দেশগুলো। ওয়াশিংটনের অস্বাভাবিক আচরণে ইরান নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া চালিয়ে বাকি দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এই অবস্থায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার উদ্যোগ বানচাল হয়েছিল। এবার তেহরানের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন। কিন্তু সেটিও বাধার মুখে পড়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো আয়াতুল্লাহর পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ না বাড়ানো মারাত্মক ভুল। ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো বলছে, চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আইনগত অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। কারণ দেশটি দুই বছর আগেই চুক্তি থেকে বের হয়ে গেছে। জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত মজিদ তখত রাফানচি যুক্তরাষ্ট্রকে উপহাস করে বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের এক স্থায়ী সদস্য শিশুর মতো আচরণ করছে। আন্তর্জাতিক সমাজের অন্যান্য সদস্যরা সে দেশকে উপহাস করছে।