ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, দোকানপাট,সরকারি বেসরকারি অফিসসহ অধিকাংশ বাসা-বাড়িতে নিরাপত্তায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় যে যন্ত্রটি অফিস কিংবা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার হতো, এখন তা আশ্রয় পেয়েছে মানুষের বাড়ির ভেতরে বাহিরেও। কম দাম, সহজলভ্য, নিরাপত্তা, ক্যামেরায় রেকর্ড ভিডিও দূর থেকে মোবাইল ফোনে দেখার সুবিধা থাকায় এর বেশি চাহিদা রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সিসি ক্যামেরার বাজার সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর। বাসা, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ লাখ সিসি ক্যামেরা বিক্রি হয়। আর এর প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হচ্ছে চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। তবে আশার কথা ভিশন, ওয়ালটনসহ দেশীয় কিছু প্রতিষ্ঠান সিসি ক্যামেরা স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করেছে। আগামীতে এসব প্রতিষ্ঠানও বড় উৎপাদনে যেতে আগ্রহী।
সিসিসি ক্যামরাগুলো পাওয়া যায় বিশেশ করে হিকভিশন, ডাহুয়া, প্যানাসনিকসহ নানা ব্রান্ডের সিসি ক্যামেরা পাওয়া যায়। বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডি, বনানী, সাইন্সল্যাবের কম্পিউটার সিটি, আইডিবি মার্কেট সহ পাড়া মহল্লার দোকনেই মিলবে সিসিটিভি ক্যামেরা। আবার বিভিন্ন এলাকার ডিশ, ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও সিসি ক্যামেরা বিক্রি ও সংযোজন করে থাকে।
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের স্মার্ট হোম ক্যামেরার স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালের পর সিসি ক্যামেরার চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। বায়তুল মোকাররম ও স্টেডিয়াম মাকের্টে ৫০টির বেশি সিসি ক্যামেরার দোকান আছে।
তিনি বলেন, ক্যামেরার পিক্সেল ও রেঞ্জ, বডি ও ব্র্যান্ডের ওপর দাম নির্ভর করে। বাজারে ডাহুয়া ও হিকভিশনের চাহিদা বেশি। এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকার ক্যামেরা আছে। ২০, ৩০, ৫০ এমনকি ৮০ মিটার পর্যন্ত এসব ক্যামেরা রিয়েলটাইম ভিডিও ধারণ করতে পারে। টেলিভিশন, কম্পিউটার মনিটর এমনকি মোবাইল ফোনের স্ত্রিনে দেখা যায় ভিডিও।
গুলিস্তানের আমিন ডিজিটালের ব্যবসায়ী শরিফ আকন্দ জানান, মুভ করতে পারে এমন এবং ফিশ আই ক্যামেরার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বিস্তারিত বা বেশি জায়গাজুড়ে দেখা যায় এসব ক্যামেরার মাধ্যমে। সরকারি প্রজেক্ট, নিরাপত্তা বাহিনী এগুলো ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া চেহারা শনাক্তকরণের ক্যামেরাও এখন বাংলাদেশে আসছে।
তবে শুধু ক্যামেরা কিনলেই হয় না, তথ্য সংরক্ষণ করতে নানা যন্ত্রপাতি কিনতে হয়। যার মধ্যে রয়েছে ডিভিআর, স্টোরেজ, মনিটর প্রভৃতি। তবে টেলিভিশনেও দেখা যায় সিসি ক্যামেরার ভিডিও। ডিভিআরসহ চার ক্যামেরা সেটআপে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ পড়ে। সাধারণত ৪, ৮, ১২ ক্যামেরা হিসেবে সেটআপ করা হয়। এগুলো সেটআপ বা বসাতে প্রয়োজন হয় দক্ষ লোকের। ক্যামেরা বিক্রি করা দোকানগুলো সাধারণত তাদের কর্মী দিয়ে সেটআপ করে দেয়।