সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনাকাঙ্খিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য ডিএমপি তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম(বার)।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মীয় অসাম্প্রদায়িকতা বজায় রাখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আজ ২৪ অক্টোবর, ২০২১ (রোববার) সকাল ১০:৩০ টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
কমিশনার বলেন, “ঢাকা মহানগর যেহেতু দেশের রাজধানী, তাই এখানে যেন এ ধরণের কোন ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমাদেরকে আরো বেশি তৎপর থাকতে হবে, চোখ-কান খোলা রাখতে হবে, গোয়েণ্দা নজরদারী বাড়াতে হবে”।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারী বাড়ানোর জন্য ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তিনি নির্দেশনা প্রদান করেন।
কমিশনার বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদে শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বী নয়, সকল সম্প্রদায়ের লোকজন অংশগ্রহণ করছে। জোনাল ডিসিরাও সে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগদান করে একাত্মতা ঘোষণা করে বলবে ‘আমরাও আপনাদের পাশে আছি’।”
ইতিমধ্যে ঢাকার বড় বড় পূজামন্ডপ ও উপাসনালয়ে পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। তাঁদের যেকোন প্রয়োজনে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি যোগ করেন ডিএমপি কমিশনার।
থানা পুলিশের সেবার মান্নোয়নে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “থানায় কেউ জিডি বা পুলিশি সহায়তা নিতে আসলে পুলিশের কেউ টাকা দাবী করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ডিএমপির কোন সদস্য দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করবে।আমরা সকলে একটি টিম, একটি পরিবার। কেউ ভালো কাজ করলে সবাই প্রশংসিত হবে, আর কেউ খারাপ কাজ করলে সকলে আমাদেরকে ভৎর্সনা করবে। আমাদের জানমাল বাঁজি রেখে এ শহরের সম্মানিত নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে”।
এর আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সেপ্টেম্বর, ২০২১ মাসে অস্ত্র, মাদক, গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম(বার)। এসময় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগসহ ১০টি বিভাগকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এসময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম বিপিএম(বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম-বার, পিপিএম-বার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম-বার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার), যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার পেলেন যাঁরাঃ
সেপ্টেম্বর, ২০২১ মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির ৮টি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে মিরপুর বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে পল্লবী থানা।। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ ইলিয়াছ হোসেন (চকবাজার জোন)। পুলিশ পরিদর্শক তদন্তদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন বংশাল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম আর পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্)দের মধ্যে প্রথম হয়েছেন মুগদা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্) আশীষ কুমার দেব। শ্রেষ্ঠ এসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন খিলক্ষেত থানার এসআই মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও মিরপুর মডেল থানার এসআই সারোয়ার জাহান। শ্রেষ্ঠ এএসআই যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মতিঝিল থানার এএসআই মোঃ হেলাল উদ্দিন ও চকবাজার মডেল থানার এএসআই রুহুল আমিন। শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হয়েছেন খিলক্ষেত থানার এসআই মোঃ আবুল কালাম আজাদ। অস্ত্র উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ শিহাব উদ্দিন। বিস্ফোরক উদ্ধারকরে প্রথম হয়েছেন লালবাগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ ইলিয়াছ হোসেন (চকবাজার জোন)। মাদক উদ্ধার করে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন মুগদা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস্) আশীষ কুমার দেব আর চোরাই গাড়ি উদ্ধার করে প্রথম হয়েছেন পল্লবী থানার এসআই মোঃ আতাউল মাহমুদ খান।
৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হিসেবে পুরুস্কৃত হয়েছেন গুলশান জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুবুল হক সজীব। চোরাই গাড়ী উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার মিরপুর জোনাল টিমের এডিসি মোঃ সাইফুল ইসলাম। অস্ত্র উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার গুলশান জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুবুল হক সজীব। মাদকদ্র্রব্য উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার মিরপুর জোনাল টিমের এডিসি মোঃ সাইফুল ইসলাম। জঙ্গি গ্রেফতারে শ্রেষ্ঠ টিমের সম্মান অর্জন করেছে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের এডিসি মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন।অজ্ঞান/মলম পার্টি গ্রেফতারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার মোহাম্মদ ফজলে এলাহী, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, ধানমন্ডি জোনাল টিম।
৮টি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার বিমান কুমার দাস, কোতয়ালী ট্রাফিক জোন। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ওয়ারী ট্রাফিক জোনের টিআই গোলাম মাওলা কবির। শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট যৌথভাবে সার্জেন্ট মোঃ মুহিবুল্লাহ, রামপুরা ট্রাফিক জোন ও সার্জেন্ট মোঃ আব্দুল কাদের, মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোন।