1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

মিরপুরে অজ্ঞাত লা‌শের পরিচয় উদ্ঘাটনসহ তিন খ‌ু‌নি‌কে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি

‌নিজস্ব প্রতি‌বেদক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৪১ বার পঠিত

মিরপুরের লাভ রোডে অজ্ঞাত মৃতদেহের পরিচয় উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো মোঃ মিরাজ ও মোঃ রাসেল। একজন শিশু হওয়ায় নাম প্রকাশ করা হলো না। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১) বিকালে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আ,স,ম মাহাতাব উদ্দিন, পিপিএম তাঁর কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত অনুমান ০১.৫৫ টায় স্থানীয় একজন ডাব ব্যবসায়ী সেকশন-২ এর লাভ রোডের মিরপুর হাউজিং এস্টেট এর পাশে পাকা রাস্তার উপর একটি নীল রঙের ড্রাম দেখে স্থানীয় কয়েক জনকে ডেকে নেন। তারা ড্রামের মুখ খুলে মোবাইলের টর্চ লাইট দিয়ে ড্রামের ভিতর মাথা নিচু অবস্থায় একজন মানুষকে দেখতে পান। তখন তারা মিরপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসারকে জানান। পরবর্তী সময়ে মিরপুর বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ সিআইডি ও পিবিআই কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে নীল রংয়ের ড্রামের মধ্য থেকে মৃত ব্যক্তিকে বের করেন। মিরপুর মডেল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। সিআইডি ও পিবিআই এর অফিসারগণ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহের আঙ্গুলের ছাপ সহ ক্রাইমসিন সংগ্রহ করেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, পরবর্তী সময়ে ঢাকার সকল থানাসহ পাশ্র্ববর্তী থানা সমূহে অজ্ঞাত মৃতদেহের ছবিসহ বার্তা প্রেরণ করা হয়। যা ডিএমপি নিউজ পোর্টালসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয় এবং কোন ব্যক্তি নিখোঁজ জিডি করতে আসলে লাশের ছবি প্রদর্শন করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অত্র মামলার ভিকটিমের স্ত্রী তার স্বামী মোঃ জুয়েল রানা(২৯) নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সাধারন ডায়েরী করিতে গেলে দারুস সালাম থানায় কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার লাশের ছবি দেখালে তিনি তার স্বামীর মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তখন তাকেসহ তার আত্মীয় স্বজনকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা উক্ত মৃতদেহ শনাক্ত করেন। পরে ভিকটিমের স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।

অভিযুক্তদের গ্রেফতার সম্পর্কে উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মিরপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ মাঈনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। এক পর্যায়ে ১৯/০৯/২০২১ তারিখ রাত আড়াইটায় দারুস সালাম থানার গৈদার টেক এলাকা থেকে মোঃ মিরাজকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত থেকে মামলার ঘটনা সংশ্লিষ্ট ভিকটিম মোঃ জুয়েল রানার নিকট থেকে নেয়া মালবোরো কোম্পানীর সিগারেট বিক্রি করা ৩৮,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। মিরাজ এর দেয়া তথ্য মতে মিরপুরের  সেকশন-২ এ ঘটনার কাজে ব্যবহৃত ১টি সিলভার রংয়ের কাভার্ড ভ্যান (রেজিঃ নং ঢাকা মেট্রোঃ ম-৫১-৪৭৯৫) উদ্ধার করা হয়।  কাভার্ড ভ্যানের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় ভিকটিম জুয়েল রানার ছবি সম্বলিত মালবোরো সিগারেট কোম্পানীর আইডি কার্ড ও ৪ কার্টুন মালবোরো সিগারেট।

মিরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেয়া তথ্য মতে পল্লবী থানার সেকশন-১১ কাঁচা বাজার এলাকা থেকে মামলার ঘটনায় জড়িত ও তদন্তে প্রাপ্ত আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত এক শিশুকে গ্রেফতার করা হয়। ওই শিশুর হেফাজত হতে উদ্ধার করা হয় মালবোরো কোম্পানীর সিগারেট বিক্রির ৭,০০০ টাকা ও ১টি ভিভো এন্ড্রোয়েড মোবাইল। ওই শিশু ও মিরাজের দেয়া তথ্যমতে  মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ রাসেলকে মিরপুর-১ এর  একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় যোগ করেন উপ-পুলিশ কমিশনার।

হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ভিকটিম মোঃ জুয়েল মিয়া ও মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ রাসেল মালবোরো সিগারেট কোম্পনাীতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। এরমধ্যে ভিকটিম মোঃ জুয়েল ছিলেন সিএসআর। অর্থাৎ সিগারেট বিক্রির সমস্ত টাকা থাকতো ভিকটিম জুয়েল এর নিকট আর রাসেল ছিলেন তার সহকারী। রাসেল এর বিশেষ প্রয়োজনে টাকার দরকার পড়ে তখন অভিযুক্তরা মিলে জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমকে ১৭ সেপ্টেম্বর তারা ঘটনাস্থলে ডেকে নেয়। পরবর্তী সময়ে ভিকটিম জুয়েল ঘটনাস্থলে আসলে প্রথমে তারা ইয়াবা সেবন করায়। এরপর রাসেল কৌশলে সেখান থেকে চলে যায়। পরে অন্যদুইজন ভিকটিমকে কাভার্ড ভ্যানের সামনে সিটে বসায়। পূর্ব-পরিকল্পনা মোতাবেক তারা জুয়েলকে পিছন দিক থেকে রশি দিয়ে গলা ও মুখ পেঁচিয়ে ফেলে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ভিকটিম এর মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিমের পকেটে থাকা মালবোরো কোম্পানীর মালামাল বিক্রি করা ৭৬,০০০ টাকা নিয়ে নেয়। পরবর্তী সময়ে ভিকটিম এর লাশ গোপন করার জন্য সেকশন-১১ হইতে ১টি নীল রংয়ের ড্রাম ক্রয় করে ড্রামের মধ্যে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে নিরাপদ স্থান খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা উক্ত ড্রামটি মিরপুর সেকশন-২ এ পাকা রাস্তার উপর রেখে চলে যায় বলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com