রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় তরিকুল ইসলাম খোকন হত্যার ঘটনায় রুজুকৃত ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতের নাম-মোঃ সাব্বির।
থানা সুত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই, ২০২১ (শুক্রবার) রাতে ভিকটিম মোঃ তরিকুল ইসলাম খোকনকে কে বা কাহারা হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য মৃতদেহে আগুন দিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই, ২০২১ তারিখে কামরাঙ্গীরচর থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে কামাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।
কামাঙ্গীরচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উক্ত মামলা তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে গত ০৩ আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যায় কামাঙ্গীরচর থানার রসুলপুর এলাকায় অভিযান করে সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময়ে ভিকটিমের ব্যবহৃত ১ টি মোবাইল ও রক্তমাখা লুঙ্গি ও শার্ট উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত সাব্বির ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত ও প্রায়ই সে ভিকটিমের বাসায় আসা যাওয়া করতো। আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সমকামিতার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ৩০ জুলাই, ২০২১ রাতে সাব্বির ভিকটিমের বাসায় রাত্রীযাপন করার জন্য যায় এবং উভয় এক বিছানায় একসাথে ঘুমায়। রাতে ভিকটিম অপ্রকৃতস্থ কামলালসা চরিতার্থ করার জন্য সাব্বিরের সাথে জোরাজুরি করে। এতে গ্রেফতারকৃত সাব্বির ক্ষিপ্ত হয়ে রান্না ঘর হতে শীল-পাটা নিয়ে এসে ভিকটিমের কপাল, নাক ও মুখে আঘাত করে। ফলে ভিকটিমের শরীর হতে রক্ত বের হতে থাকে। এরপর ব্লেড দিয়ে ভিকটিমের পেট কেটে ভিকটিম সাব্বিরের মৃত্যু নিশ্চিত করে।
অফিসার ইনচার্জ বলেন,ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করার বাসার ড্রয়ার হতে কাপড়, চোপড় ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বের করে ভিকটিমের গায়ের উপর রাখে। পরবর্তীতে ম্যাচ দিয়ে ভিকটিমের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে চলে যায়। যাওয়ার সময়ে গ্রেফতারকৃত সাব্বির ভিকটিমের ২ টি মোবাইল ও নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত সাব্বির ভিকটিমের ১টি মোবাইল চার হাজার টাকায় বিক্রয় করে সিলেট চলে যায়। পুলিশের অভিযানের তৎপরতা দেখে সিলেট হতে তার গ্রামের বাড়ী শরীয়তপুর চলে যায়। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ শরীয়তপুরে অভিযান চালায়। পুলিশের অভিযানের মুখে অভিযুক্ত সাব্বির ঢাকায় চলে আসে।
গ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করছে মর্মে কামরাঙ্গীরচর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান।