জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ এলাকায় নিরপরাধ মুসল্লি ও সাধারণ জনগণের উপর ইসরায়েলি পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আল-আকসা মসজিদ ঘিরে কয়েকদিন ধরে সংঘাত চলার মধ্যে সোমবার (১০ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসল্লি ও সাধারণ জনতার উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা ও সংঘাত এবং ইসরায়েল কর্তৃক পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ধরনের হামলা মানবিকতার রীতি, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন। এ ঘটনা সারা পৃথিবীর নিপীড়িত জনগণের মর্মবেদনা-ই প্রকাশ করছে।
মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল আকসা পুরো রমজানজুড়ে জেরুজালেমের সহিংসতার কেন্দ্রস্থল হয়ে আছে। দুই পক্ষের এই সংঘর্ষের ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
ইসরায়েলের ‘জেরুজালেম দিবস’ পালনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আল আকসা মসজিদের সামনে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ইসরায়েলি পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, এ সহিংতায় ১৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক।
বড় ধরনের এই সংঘাতের পর দেওয়া বিবৃতিতে ফিলিস্তিন সঙ্কটে দুই-রাষ্ট্রীয় সমাধান চাওয়ার অতীত অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।
জেরুজালেমে ‘সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ এবং দখলকৃত এলাকার ব্যক্তিগত সম্পত্তি জবরদখল’ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই ধরনের বর্ণবাদী নীতি ও ভীতিকর পদক্ষেপ দখলকৃত এলাকায় যুদ্ধাপরাধের সামিল হতে পারে।
জেরুজালেমের দখল করা পূর্ব অংশ ইসরায়েল নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ করে নিলেও তাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সায় মেলেনি, তারপরও পুরো জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দেখে ইসরায়েল।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ড নিয়ে যে রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখে, তার রাজধানী করতে চায় পূর্ব জেরুজালেমকে।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধ পূর্ববর্তী সীমানার আলোকে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের আলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অবস্থানও বিবৃতিতে পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, টেকসই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে জনগণের সার্বভৌম ও স্বাধীন স্বদেশ নিশ্চিতের অলঙ্ঘনীয় অধিকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে যে রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য সংঘাত ছেড়ে সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দুই পক্ষকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।