1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

ম‌হিমা‌ন্বিত রজনী লাইলাতুল কদর

নাগরিক অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৯ মে, ২০২১
  • ৩৮২ বার পঠিত

মাহে রমজানুল মোবারকের আজ ২৬ তারিখ। আজকের দিবাগত রাত বা রমজানের ২৭তম রাত সাধারণভাবে লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত হিসেবে পরিচিত। আভিধানিকভাবে লাইলাতুল কদর অর্থ সম্মানের রাত।

পবিত্র কুরআনে অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত হিসেবে এই রাতটি আখ্যায়িত হয়েছে। কুরআন মাজিদে একটি সূূরা নাজিল হয়েছে এ প্রসঙ্গে। এতেই ঘোষণা করা হয়েছে লাইলাতুল কদরের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি। তাফসিরের কিতাবগুলোতে উল্লেখ রয়েছে, একদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ভেবে অস্থির হচ্ছিলেন যে, আগের নবীর উম্মতেরা দীর্ঘ হায়াত পেত। ফলে তারা অনেক বেশি ইবাদত বন্দেগির সুযোগ পেত। কিন্তু শেষ নবীর উম্মতের হায়াত খুবই সীমিত। অতএব তাদের পক্ষে উচ্চ মর্যাদা লাভের সুযোগ কম। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এই সূরা নিয়ে উপস্থিত হন হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম। ফলে শান্ত হন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবিরা।

আল্লাহতায়ালা এ রাতেই কুরআন মজিদ নাজিল করেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তেমনি এ রাতটির মর্যাদা হাজার মাসের চেয়ে বেশি বলেও ঘোষণা করেছেন। কিন্তু‘ রাত কোনটি তা নির্দিষ্ট করে বলে দেননি। হাদিস শরিফেও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোনটি কদরের রাত। নিঃসন্দেহে এতে অনেক রহস্য ও তাৎপর্য নিহিত রয়েছে। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত অনুসন্ধানের তাগিদ দিয়েছেন ।

কুরআন মজিদের বর্ণনা অনুযায়ী, এই এক রাতে ইবাদতের বিনিময়ে হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াবের চেয়েও বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। হয়তো আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাননি মুসলমানরা একটি রাতের ভরসায় বসে থেকে সারা বছর বা সারা মাস অবহেলায় কাটিয়ে দিক। এ জন্য এটাকে রহস্যময় করে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমেই মূল্যবান কিছু অর্জন করতে হয় । যে রাতের মূল্য হাজার মাসের চেয়ে বেশি, তা যদি সহজে পাওয়া যেত, তাহলে মানুষ হয়তো এটাকে বেশি গুরুত্ব দিত না। তাই তা অনির্দিষ্ট করে রেখে মানুষকে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।

কেউ কেউ রমজানের যেকোনো অংশে এ রাত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু বেশির ভাগ মনীষীর মতে রমজানের শেষ দশকেই তা লুকায়িত রয়েছে। আবার কারো কারো মতে, এ রাতের তারিখ পরিবর্তনশীল। কোনো বছর একুশ, কোনো বছর তেইশ, কোনো বছর পঁচিশ, কোনো বছর সাতাইশ, আবার কোনো বছর ঊনত্রিশ তারিখের রাত লাইলাতুল কদর হয়।
কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে অনেক মনীষী রমজানের সাতাইশ তারিখের রাতকে লাইলাতুল কদর হিসেবে চিহ্নিহ্নত করেছেন। এ ব্যাপারে সাহাবিদের মধ্যে এ উম্মতের শ্রেষ্ঠ কারী হিসেবে আখ্যায়িত হজরত উবাই ইবনে কাব রাজিয়াল্লাহু আনহুর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি জোর দিয়ে বলতেন, রমজানের সাতাইশতম রাতই কদরের রাত। অন্য দিকে ফিকাহ ও ইজতেহাদের জ্ঞানে চার খলিফার পরেই যার স্থান, সেই হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাজিয়াল্লাহু আনহু বলতেন-এটা রমজানের বাইরেও হতে পারে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাজিয়াল্লাহু আনহুর মন্তব্য সম্পর্কে হজরত উবাই ইবনে কাব রাজিয়াল্লাহু আনহু বলতেন- আমার ভাই আবদুল্লাহ ভালো করেই জানেন এটা রমজানের মধ্যে এবং তা সাতাইশতম রাত। কিন্তু লোকেরা এ রাতের ভরসায় বসে থাকবে এবং আলসেমিতে সারা বছর ও সারা রমজান মাস কাটিয়ে দেবে এ ভয়ে তিনি তা লোকদেরকে জানাতে চান না। হজরত উবাই ইবনে কাব রাজিয়াল্লাহু আনহুকে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন সাতাইশ রমজানের রাতটিই কদরের রাত? জবাবে তিনি বলেনÑ এ রাতের যেসব আলামত মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন আমরা সেগুলো সাতাইশ তারিখে পেয়েছি। হজরত ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং হজরত আবদুল কাদের জিলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহিসহ এক দল মনীষীর ব্যাপারে বলা হয়, তারা রমজানের সাতাইশ তারিখের রাতকে লাইলাতুল কদর বলে মনে করতেন। এসব মনীষীর নাম যুক্ত হওয়ায় রমজানের ছাব্বিশ তরিখ দিবাগত রাতটি অত্যন্ত আগ্রহ-উদ্দীপনা নিয়ে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করার ধারা চালু হয়েছে ।

তবে মনে রাখা প্রয়োজন, কদরের রাতের যে মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য, তার মূল উপাদান কুরআন মজিদ। শেষ নবীর উম্মতের জন্য জীবন ব্যবস্থার চূড়ান্ত নির্দেশনা হিসেবে কুরআন মজিদ নাজিলের সাথে রাতটি সম্পর্কিত হওয়ায় এই মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য সাব্যস্ত হয়েছে। অতএব এ রাতের সুফল পুরো মাত্রায় পাওয়ার জন্য কুরআন মাজিদের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করাই আসল উপায়।

কুরআন পাঠ ও অধ্যয়ন এবং কুরআনি বিধান ও নির্দেশনা অনুসরণেই নিহিত রয়েছে মানুষের প্রকৃত সাফল্য । লাইলাতুল কদরে সালাত, তেলাওয়াত ও জিকির তাসবিহের সাথে যেমন অতীত জীবনের পাপরাশি মোচনের জন্য মহান প্রভুর কাছে আকুল আবেদন জানাতে হবে, তেমনি তার তাওফিক প্রার্থনা করতে হবে কুরআনকে জীবনের দিশারী হিসেবে মেনে চলার।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com