ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরা নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতে পারেন। টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দর্শকেরা মাঠে ঢুকতে পেরেছিলেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় ম্যাচে ঝলসে উঠেছিল বিরাট কোহলির ব্যাট।কিন্তু চোখজুড়ানো ব্যাটিংয়ের কথা বললে আজ কোহলির ব্যাট যেন তুলি হয়ে উঠেছিল।
অথচ করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এ ম্যাচেই কিনা দর্শকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি! টিভি পর্দায় কোহলির এমন ব্যাটিং দেখে কী আর আশ মেটে! কোহলি ব্যাট করার সময় টুইট করেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন, ‘জিনিয়াস! গ্রেট খেলোয়াড়ের মধ্যে তার ব্যাটিং সবচেয়ে চোখজুড়ানো।
ইংল্যান্ড দলের ব্যাটিংয়ের সময়ও টুইট করেন ভন, ‘বিরাট কোহলি আজ যতটা ভালো ছিলেন, জশ বাটলার তার চেয়ে মোটেও পিছিয়ে নেই।আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের ফল ঘুরপাক খেয়েছে মূলত এ দুজনের ব্যাটে। আগে ব্যাট করা ভারতের ৬ উইকেটে ১৫৬ রানের পুঁজিতে ‘নিউক্লিয়াস’ ছিল কোহলির ৪৬ বলে ৭৭ রানের মনোমুগ্ধকর অপরাজিত ইনিংস।
আর তাড়া করতে নেমে বাটলার যে ইনিংসটি খেললেন, ম্যাচটা যদি না দেখে থাকেন, তাহলে শুধু ইংলিশ উইকেটকিপারের রানসংখ্যা শুনলেই কে জিতেছে, কে হেরেছে আন্দাজ করে নেওয়া যায়। ৫২ বলে ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন বাটলার। ঠিকই ধরেছেন। বাটলারের এই ইনিংসে ভর করেই ১০ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজে ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। কোহলির সতীর্থদের বাজে ব্যাটিং আক্ষেপ হয়ে থাকবে ভারতের সমর্থকদের।
কোহলি ছাড়া বাকিদের কেউ ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ বলে ২৫ রান এসেছে ঋষভ পন্তের ব্যাট থেকে। বাকিরা আরেকটু দাঁড়াতে পারলে ভারতের সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত। ৪ ছক্বা ও ৮ চারে ইনিংসটি সাজান কোহলি। পঞ্চম ওভারে দলীয় ২০ রানে ভারত ২ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসেন তিনি।
উইকেটের চারপাশে শট খেলার পাশাপাশি ইনিংসটি তিনি কীভাবে সাজিয়েছেন, তা খানিকটা ঠাহর করা যায় এ পরিসংখ্যানে—প্রথম ১৫ বলে তাঁর স্ট্রাইক রেট ৯৩.৩৩। পরের ১৫ বলে ১২০ এবং শেষ ১৬ বলে ২৮১.২৫! অর্থাৎ সময় গড়ানোর সঙ্গে আরও খোলতাই হয়েছে কোহলির ব্যাট। টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ২৭তম ফিফটি, যেখানে এ নিয়ে ১৮তমবার কোহলি ফিফটি পেলেও তাঁর বাকি সতীর্থদের কেউ ফিফটির দেখা পাননি। দলীয় ইনিংস তিনি শেষ পর্যন্ত টানায় ভারত দেড় শ রানের কোটা টপকে যেতে পেরেছে।
তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও বাটলারের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। ভুবনেশ্বর কুমারের সুইংয়ে শুরুতে খাবি খেয়েছেন দুজন। যুজবেন্দ্র চাহালকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন রয় (৯)। তিনে নেমে ১৮ রান করা ম্যালানকে তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তৃতীয় উইকেটে জনি বেয়ারস্টো ও বাটলারের ৫২ বলে অপরাজিত ৭৭ রানের জুটিতে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ৫ চারে ২৮ বলে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন বাটলার। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন মার্ক উড।