নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়ন থেকে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১৭) দুই মাস পর ঢাকার সাভার থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর আগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৪ জনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি সাইফুল ইসলাম ইমনকে ৫ দিনের রিমান্ড ও ফয়সালের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়েছে আদালত।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অপহৃত ছাত্রীকে সাভারের পূরগাও এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় সাভারের পূরগাও এলাকার জৈনিক রুবির বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওই বাসার একটি কক্ষ থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তবে এসময় ওই বাসায় অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, এ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামি সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সালকে শনিবার বিকেলে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ বিচারক মোসলেহ উদ্দিন মিজান ১৬৪ ধারায় আসামি ফয়সালের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অপর আসামি ইমনকে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় ৩দিন ও পর্ণোগ্রাফী মামলায় ২দিনসহ মোট পাঁচ দিনের রিমান্ড প্রদান করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, পৃথক দু’টি মামলায় সাইফুল ইসলাম ইমনকে ৫দিন করে ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করলে আদালত দু’টি মামলায় তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলা এবং ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ রাতে মামলার আসামি ফয়সাল ও জোবায়ের ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে। ঘরে থেকে যাওয়ার সময় তারা আলমিরা থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের চেইন ও দুইটি আংটি নিয়ে যায়।
এরপর গত ২০২০ সালের ৫ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে ইমন ও রাসেল ঘরে ডুকে নির্যাতিতাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার তিন মাস পর রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকার মিরপুর-২, ৭নং রোডের ৩নং গলির জান্নাত নামের এক নারীর কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে আসেন তার মা। ওই তিন মাসে অপহৃতাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে রাসেল। এরপর বিভিন্ন সময় ইমন বাড়িতে এসে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
সর্বশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আবারও অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। মেয়েকে ফেরত পেতে হলে আসামিরা তার মাকে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে প্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে অপহৃতের মা গত বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি ফয়সাল ও ইমনকে গ্রেপ্তার করে।
এ জাতীয় আরো খবর..