সাতক্ষীরায় ভূমি সচিব পরিচয় দিয়ে জেলা জজকে হুমকিদাতা সেই ভুয়া সচিবকে সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান নিজেই জামিনে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন।
রোববার (২৫ জানুয়ারি) জামিনের আদেশ শুনে আদালতের কাঠগড়ায় ভুয়া সচিব গোবিন্দ কুমার মণ্ডল কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, ‘স্যার আমি ক্ষমা চাচ্ছি, জীবনে আর কখনও এ ধরনের কাজ করবো না।’
এসময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবী, আইনজীবী সহকারী ও বিচাপ্রার্থী সবাই গোবিন্দকে তিরষ্কার করলে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘ভুলতো মানুষই করে, আর গোবিন্দও একজন মানুষ। সে যখন বলছে, না বুঝে ভুল করে ফেলেছে, সেক্ষেত্রে আর কিবা করার আছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভূমি সচিব পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানকে একটি বিশেষ মামলায় তাদের পক্ষে রায় দেওয়ার জন্য তদবির করেন শ্যামনগরের যাদবপুর গ্রামের মনোরনঞ্জন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ কুমার মন্ডল (৩৫)। শুধু তাই নয়, রায় পক্ষে দিতে না পারলে এলাকার উন্নয়নের জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করেন ভুয়া সচিব।
ওই ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমানের পক্ষে আদালতের নাজির আব্দুল কাদের বাদী হয়ে গত ৩০ নভেম্বর সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এবং পুলিশ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হুমকিদাতা ওই ভুয়া সচিবকে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে গ্রেপ্তার করে।
এরপর শুরু হয় ভুয়া সচিবের হাজত খাটার পালা। সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির কোনো সদস্য তার (গোবিন্দ) পক্ষে যেমন ওকালতি করেননি, তেমনি জঘন্য ওই অপরাধের জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকেও জামিন করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এক পর্যায়ে জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান জেল খানায় খোঁজ-খবর নিয়ে জেল কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে জামিন ধরার জন্য পরামর্শ দেন।
সে অনুযায়ী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে প্যানেল আইনজীবী এড. খায়রুল বদিউজ্জামানকে নিয়োগ দেন তার জামিন ধরার জন্য। অবশেষে রোববার নিজ আদালতে শুনানি শেষে পিপি এড. আব্দুল লতিফসহ উপস্থিত আইনজীবীদের ঘোর বিরোধিতা সত্ত্বেও তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান।
এ জাতীয় আরো খবর..