1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন

কাজের মাধ‌্যমে উর্পা‌জিত অর্থ দি‌য়ে জীবন বদলাতে চায় হকার রহিম

নাগ‌রিক ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৪০৩ বার পঠিত

এখনো মাঝে মাঝে ঘুমের ঘরে লাফিয়ে উঠি, এই বুঝি পত্রিকার গাড়িটা চলে গেল। জেগে দেখি না ভোর হয়েছে -আমি বিছানায় আছি। কত দিন কাজে যাইনা কিন্তু ভোরে জেগে উঠার অভ্যাসটা রয়ে গেছে। সংসারের অভাব আর বেকারত্বের বোঝা সইতে পারছিনা ”। এভাবে কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার নহল চৌমহনী গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে হকার আব্দুর রহিম।

ঘুমের মধ্যেই কল্পনায় থাকি,কখন জানি ভোর হয়ে পত্রিকার গাড়ি চলে যায়। সময় মত স্টেশন পৌঁছে না পারলে গাড়ী চলে যাবে। একবার গাড়ি মিস হলে- পত্রিকা চলে যায় কসবার কুটি  চৌ মুহনী।

তাই কাকডাকা ভোর হতে পত্রিকার জন্য পান্নারপলু স্টেশন গিয়ে সুগন্ধা গাড়ির অপেক্ষায় বসে থাকি। পত্রিকা নামিয়ে সাইকেলের পেছনে বেঁধে এক হাতে সাইকেল চালাই, প্লাস্টিকে মোড়ানো অন্যহাতটি সাইকেলের উপর ফেলে রাখি। এই কায়দায় সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন ৪০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড, জাহাপুর জমিদার বাড়ি, আলীরচর কলেজ, বোরারচর ও কলাকান্দি বাজারে বি‌ভিন্ন পত্রিকা বিক্রি করে আস‌ছে গত ১৪ বছর। এতেই তার পরিবারের ডাল ভাতের ব্যাবস্থা হয়ে যেত।

একজন পঙ্গু মানুষ হিসাবে এই কাজটি তার জন্য কঠিন ছিল, তবে দেহের সাথে মানিয়ে নিয়েছে র‌হিম। অনেক মানুষের ভালবাসা আর স্মৃতি জড়িয়ে আছে তার এই পেশায়। তাই কাজটি কষ্ট মনে হতো না। এখন পত্রিকা বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রহিমের কষ্টের কথা শোনার মানুষ নাই।

করোনা ভাইরাস আসার পর স্কুল,কলেজ , অফিস আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার পত্রিকা বিক্রিও বন্ধ হয়ে যায়। খুচরা পাঠকরা পত্রিকা ধরেনা, তাদের ধারনা পত্রিকায় ভাইরাস আছে। তাই এই সে ১০ মাস একেবারে বেকার বসে আছে। দুই মেয়ে এক ছেলে আর বৃদ্ধ বাবা মা নিয়ে রহিমের সংসার। সকলের ভরণ পোষন দিতে তার কষ্ট হয়। সাদা ভাতের সাথে ডালই চলে বেশি। রহিম বলেন সর্বশেষ মাছ, গোস্ত কবে নিয়েছি তা মনে নেই। এই নিয়ে আমার কোন আক্ষেপ নেই , যখন ছেলে মেয়েরা ভাত দিলে মাছের জন্য কান্না করে তখন আর সহ্য হয়না। ছোট বাচ্চাটার বয়স দুই বছর । ১০ মাসের মধ্যে একদিনও একপোয়া দ্ধু কিনে দিতে পারে নাই।

করোনার মধ্যে কিছু মানুষের সহযোগীতা পেয়েছি। যা পেয়েছি তাতে ১০ মাস চলে না। একটি সংসারে চালা‌তে যতটুকু প্রয়োজন হয় তা আমার নেই। ধার দেনা করে শুধু জীবনটা বাঁচিয়ে রাখছি। এভাবে আর কয়দিন চলবে। আমি ভিক্ষা করতে শিখিনি। কাজ করে খেতে চাই। কবে যে,করোনা যাবে জানি না।

শুনেছি সরকার পঙ্গু প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য কত কিছু করে। আমাকে যদি বাঁচার মত কিছু একটা করে দিত। তাহলে আমি আমার ছেলে মেয়েকে নিয়ে জীবনাটা সাজাতাম। বড় মেয়ে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় থ্রীতে পড়ে, ছেলেটা ইবতেদায়ী প্রথম শ্রেণিতে ,ইচ্ছে একজন আলেম বানানো, মৃত্যুর পর যেন কবরের পাশে দাড়িয়ে দোয়া করতে পারে।সুত্র: আজ‌কের কু‌মিল্লা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com