1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫১ অপরাহ্ন

ক্লু লেস হত‌্যা ও পর‌কীয়া :এএস‌পি সা‌বিনা ইয়াস‌মিন

ডেস্ক রি‌র্পোট:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ৮০৩ বার পঠিত
গাভতলী সা‌র্কেল এএস‌পি সা‌বিনা ইয়াস‌মিন

রবিবার সকাল ১১ টায়” ট্রিপল নাইনে “জানানো হলো বাঙালি নদীতে ভেসে আসছে একটি লাশ! ৯৯৯ থেকে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশকে এ বিষয়ে জানানো মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেল সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ! প্রবল স্রোতকে উপেক্ষা করে অবশেষে ছাগল ধরাতে লাশটি যখন উপরে উঠানো হয় লাশটির প্রচন্ড দুর্গন্ধ কে উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ জমে যায় চারিদিক। শুধু মেরেই ক্ষান্ত নয় বরং মৃত ব্যক্তির মুখকে এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুস্কৃতিকারীরা! এমতাবস্থায় শনিবারে ব্যক্তি মিসিং ডায়েরি করা পরিবারকে খবর দেওয়া হলে তারা লাশটি শনাক্ত করে জানায় মৃত এই লাশটি মিসিং ডায়েরির ওই ব্যক্তি!এসপি স্যারের কঠোর নির্দেশনা ছিল উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করতেই হবে! এরপর আমরা সকলে নাওয়া-খাওয়া ভুলে আটঘাট বেঁধে লেগে গেলাম! মনে আছে সেদিন সারাদিন খাইনি এমনকি রাত দুইটা পর্যন্ত । নিহতের স্ত্রীকে মৃত ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় ! সে জানায় গত শুক্রবার থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন । সে পেশায় একজন অটোচালক। স্বাভাবিকভাবে মনে হতেই পারে অটো ছিনতাইয়ের জন্যই হতে পারে এই মার্ডার ।

কিন্তু কেন জানি সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং অন্যান্য নিকট আত্মীয় স্বজনদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানতে পারি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক খুব বেশি ভালো ছিল না! বৌ এর মামাতো ভাইয়ের নাম ফকির! এ ছেলে প্রতিদিন তার সাথে অটো বাইক চালানোর সময় থাকলেও সেদিন ছিল না! পুলিশ তাই সব বিষয়ে কেন জানি সন্দেহ হয়! ভাবলাম পরকীয়া জনিত কারন নয় তো! এই একটা সন্দেহ ঘুরিয়ে দিল মামলার প্রেক্ষাপট! এত মানুষ আসলে ও ফকিরকে কোথাও দেখা গেলোনা! অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে অন্যত্র থেকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়! জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায় সে ঘটনার সময়ে নিহত ব্যক্তি আশিক এর সাথে ছিল কিন্তু সিহাম এবং নাঈম নামে দুজন ব্যক্তি তাকে মার্ডার করেছে এবং সে এই বিষয়ে মিনা (নিহতের স্ত্রী) তার বোনকে শুক্রবার রাতে জানিয়েছে ! শুনে খুবই অবাক হলাম এইতো পরেরদিন অর্থাৎ শনিবার মিসিং ডায়েরি লিখেছে মিনা তার স্বামী হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে” তার মানে সে পুলিশকে মিসগাইড করেছে! মনে হল এ তো আর এক মিন্নি! কিছুক্ষণ পর মিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো ।সে প্রথমে অস্বীকার করলেও ফকিরকে সামনাসামনি করলে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করল!এমনকি বিকালে তার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ফকির! এরপর অটোরিকশার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফকির জানালো অটোরিকশাটি ধুনুটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে! তখন এক টিম চলে গেল অটোরিকশা উদ্ধারে তাকে নিয়ে আর অন্য দুই টিম হত্যায় জড়িত অন্য দুই আসামি সিহাম ও নাঈমকে গ্রেফতার করার জন্য গেল!অনেক খোঁজাখুঁজি করে শেষ পর্যন্ত সিয়াম ও নাঈম রাতে গ্রেফতার করতে সফল হলো! নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের জবানবন্দিতে বোঝা গেল মিনা ও ফকিরের পরকীয়া জনিত কারনে এই নির্মম হত্যাকান্ড ! মিনা ও ফকির এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আর অটোরিকশাটি তারা বাঙালি নদীতে সেই সময়ে লাশের সাথে ফেলে দিয়েছে যেটি এখন উদ্ধারের চেষ্টা করছি আমরা! আলহামদুলিল্লাহ চারজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে! শুরু থেকে এসপি স্যার সকল বিষয়ে আমাদের সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করে আসছিল! অসাধারণ একটি টিম ওয়ার্ক ছিল এই মামলাটি তদন্তে! এভাবে একটি সফল তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে নিহত ও তার পরিবারকে সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ার দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দিনশেষে ক্লান্তিময় মুখের এক অসাধারণ পরিতৃপ্তি ।

লেখক:

এএস‌পি সা‌বিনা ইয়াস‌মিন

সা‌র্কেল, গাভতলী, বগুড়ার

ফেইসবুক থে‌কে সংগৃ‌হিত

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com