দেশকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘উন্নত রাষ্ট্র গঠনে নবপ্রজন্মের মনন তৈরিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনন্য। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকরা জাতিকে পথ দেখায়, মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়।’
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা প্রদর্শনীর সমাপনী ও ডিআরইউ সম্মাননা প্রদান’ অনুষ্ঠানে তার সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন করা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ রচনা করা, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা। উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে হলে একটি উন্নত প্রজন্মেরও প্রয়োজন, যে প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে। আর সেই নতুন প্রজন্মের মনন তৈরিতে, দেশকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করতে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও পরবর্তীতে দেশ গঠনে সাংবাদিকদের অনবদ্য ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকের প্রেক্ষাপটে নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি, সমাজে তৃতীয় নয়ন খুলে দেওয়া, সমাজের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরা, দায়িত্ববানদের আরও দায়িত্ববান করা এবং সঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী এ কারণে সাংবাদিকদের প্রতি মমত্ববোধ থেকে এই করোনাকালে তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করেছিলেন এবং সেই তহবিল থেকে আমরা সহায়তা করে যাচ্ছি, যেটি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কোনও দেশেই করা হয়নি।’
তথ্যমন্ত্রী এ সময় ২৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানমালা সুন্দর ও সফলভাবে সম্পাদন, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখার ওপর সম্মাননা প্রদানের আয়োজনের জন্য ডিআরইউকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনের সব সাংবাদিকের আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। সম্প্রচার আইন হলে এর আওতায় সম্প্রচার কমিশনের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচার খাত পরিচালিত হবে।’
অনুসন্ধানী রিপোর্টের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে এবং পিআইবির নিজস্ব বাজেটের মাধ্যমে আরও বেশি সংখ্যক সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিতে বলা হয়েছে।
ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং ডিআরইউ সদস্যরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তথ্যমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল ১৫ জন সাংবাদিকের হাতে ডিআরইউ সম্মাননা তুলে দেন।
‘মত প্রকাশের নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সমর্থনযোগ্য নয়’
এদিকে আজ সকালে বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ডিজিটাল প্রদর্শনীর বিষয়ে ভারতের মহাত্মা গান্ধী ডিজিটাল জাদুঘরের কিউরেটর বিরাদ রাজারাম ইয়াজমিক এবং প্রকাশনা প্রধান তরণদ্বীপ গুন্তির সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া কিংবা হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করে কোনও চিত্র প্রকাশ করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং এটি করা উচিত নয়। একইসঙ্গে ধর্মের নামে কাউকে হত্যা করাও সমর্থন করি না।