আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারী নির্দেশে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কৌশল অবলম্বন করে অনেকে নিজের শিশুসন্তানকে নৌকা বা বোর্ডে নিয়ে আসছে জেলেরা। ফরিদপুরের পদ্মা নদীর নারকেলবাড়িয়া অংশে ইলিশ ধরার সময় নৌকায় এক শিশুকে পেয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিন অভিযান পরিচালনাকালে ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ২০ কেজি ইলিশ ও ৭০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদরপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল চন্দ্র শীল বলেন, বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পদ্মা নদীর চরনাসিরপুর, জিয়ারা ও নারকেলবাড়িয়া অংশে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে চরনাসিরপুর থেকে ৬, জিয়ারা থেকে ৬ জেলেকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জনকে ১৫ দিন করে ও দুইজনকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, পদ্মার নারকেলবাড়িয়া অংশে ইলিশ ধরা ট্রলারে অভিযান চালালে দুই জেলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় ওই ট্রলারে এক শিশুকে পাওয়া যায়। মূলত গ্রেফতার এড়াতেই তার বাবা তাকে নিয়ে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই ট্রলার থেকে জাল ও মাছ জব্দ করা হয়। পরে ওই শিশুর স্বজনদের খুঁজে বের করে মুচলেকা নিয়ে তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলা অভিযানে ২০ কেজি ইলিশ ও ৭০ হাজার মিটার জাল জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাছগুলো স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। আর জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলেদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, মাদারীপুরের শিবচর ও ফরিদপুরের সদরপুরের বিভিন্ন গ্রামে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এসিল্যান্ডের সঙ্গে ছিলেন সদরপুরের মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শেখ তানভীর আক্তার ও পুলিশ ফোর্স।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজল চন্দ্র শীল জানায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা পদ্মায় ইলিশ শিকারে আসছেন। এরা মূলত সিজনাল ইলিশ শিকারি। এমনিতে তারা অটোরিকশা চালান বা অন্য কাজ করেন। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় মাছ বেশি পাওয়া যায়। মাছের দামও বেশি। যে কারণে এরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইলিশ ধরতে চলে আসে। যেটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কাউকে ইলিশ ধরতে দেওয়া হবে না।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচির আওতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, নভেম্বরের ৪ তারিখ পর্যন্ত ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..