কুমিল্লা সদরের শাসনগাছা সিএনজি- মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে সংঘর্ষসহ হত্যাকান্ডের ঘটনার ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই জড়িত ৭ জন আসামীকে গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ২টি বিদেশী পিস্তল, ৭ রাউন্ড গুলি, ৪টি ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান পিপিএম সংবাদ সম্মেলন করে অস্ত্রসহ ৭ জন গ্রেফতারের বিষয়টি নাগরিক খবরকে নিশ্চিত করেছেন। এ সময় জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরোও জানা যায়,১৫ মার্চ দুপুরে শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মহিলা যাত্রীর সাথে মাইক্রোবাস ড্রাইভার ও লাইনম্যান এর তর্ক-বিতর্কের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসনগাছা মধ্যপাড়া এবং মোল্লা পাড়ার লোকজনের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয় এবং জামিল হাসান অর্ণব নিহত হন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহতের ‘মা ঝর্ণা আক্তার বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় এজাহার নামীয় ২৫ জন এবং অজ্ঞাত ৩০/৩৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনায় কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান পিপিএমের কঠোর নির্দেশনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোতয়ালী মডেল থানা ও জেলা ডিবি পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে।
ব্যাপকভাবে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা হয়। দ্রুত সময়ে উক্ত ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এজাহারনামীয় আসামী খলিলুর রহমানকে পলায়নকালে শাসনগাছা মোল্লা বাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে এজাহারনামীয় আসামী রিয়াজকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ঘটনায় গুলিবর্ষণকারী ফজলে রাব্বিকে পাঁচথুবী ইউনিয়নের বিষ্ণুপুরের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে ১৭ মার্চ রাত ১ টায় রাস্তার উপর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদে শাসনগাছা মোল্লাবাড়ী সংলগ্ন খলিলুর রহমানের নির্মানাধীন বিল্ডিং এর পূর্ব পার্শ্বে পরিত্যক্ত রান্না ঘরের সিলিংয়ের উপর থেকে দুটি ম্যাগজিনসহ একটি বিদেশী পিস্তল ও ৬ রাউন্ড লোডকৃত গুলি উদ্ধার করা হয়।
অপর আসামী মোঃ সুমনকে উত্তর দূর্গাপুর ইউনিয়নের সাবেক মহিলা মেম্বার লিপির শাসনগাছার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে ভোররাত ৩ টায় গ্রেফতার করা হয়। সুমনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী তার দেখানো শাসনগাছাস্থ মোল্লাবাড়ী সংলগ্ন মৃত রশিদ মিয়ার মাটির ঘরের দক্ষিণ পার্শ্বের সীমানা প্রাচীর এবং নুরু মিয়ার নির্মানাধীন ভবনের সীমানা প্রাচীরের মাঝে ফাঁকা জায়গা থেকে দুটি ম্যাগজিনসহ একটি বিদেশী পিস্তল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আসামী রাশেদকে বুড়িচং উপজেলার নিমসারের ভাড়া বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। আসামী কায়সারকে শাসনগাছা মোল্লা বাড়ী এলাকা থেকে, আসামী সোলেমানকেও মোল্লা বাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। উক্ত ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহারকারীসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন, কুমিল্লা সদরের শাসনগাছা এলাকার মোল্লাবাড়ির খলিলুর রহমানের ছেলে ফজলে রাব্বি (৩০), গর্জনখোলা এলাকার মৃত. রফিক মিয়ার ছেলে মোঃ সুমন (২৮), শাসনগাছা (দক্ষিণ বাড়ী) এলাকার মৃত মনু মিয়ার ছেলে ১১ মামলার আসামি রাশেদ (৩৮), শাসনগাছা (মোল্লা বাড়ী) এলাকার আনোয়ার মিয়ার ছেলে ৩ মামলার আসামি কাউছার (২০), একই এলাকার মৃত. বাদশা মিয়ার মিয়ার ছেলে খলিলুর রহমান (৬০), একই এলাকার মৃত. হাবিবুর রহমান প্রকাশ হাবু মিয়ার ছেলে রিয়াজ (২৬) এবং শাসনগাছা (দক্ষিণ বাড়ী) এলাকার মৃত. আবদুর রশিদের ছেলে সোলেমান (৩৮)।
এদিকে এ সংঘর্ষ ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত আরো ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর সদস্যরা।