১৯৭০ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সে নির্বাচনে মুসলিম লীগ ২০ দলীয় জোট করেছিল, আর আওয়ামী লীগ ছিল একা। তাদের ধারণা ছিল ২০ দলীয় জোট কমপক্ষে ২০টা সিট পাবে, কিন্তু পেয়েছিল মাত্র দুইটা সিট।
বুধবার (৭ জুন) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমগ্র পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ সিট পেয়ে যায়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। ছয় দফা মানুষ লুফে নিয়েছিল, এই ছয় দফা থেকে এক দফার উত্থান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের বলতেন ছয় দফা তিনি দিয়েছেন। কিন্তু ছয় দফার প্রকৃত অর্থ হলো এক দফা, অর্থাৎ স্বাধীনতা। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এ নির্বাচন অনেক শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তাতে আমাদের দেশে অনেক দল অনেক নেতা নির্বাচনে যেতে রাজি ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, আমি নির্বাচন করবো।
শেখ হাসিনা বলেন, ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে এ নির্বাচন। এই নির্বাচনে জনগণের নেতা কে হবে সেটা নির্বাচিত হবে। কে জনগণের নেতা সেটা নির্বাচিত হবে। এখানে কথা বলার অধিকার হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের মুক্তির জন্য, মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের আমলে বাঙালিদের কোনও অধিকার ছিল না। চিরদিন অবহেলিত ছিলাম আমরা।
বাঙালিদের দ্বারা পাকিস্তান সৃষ্টিই হয়েছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। পাকিস্তানিদের দ্বারা আমরা ছিলাম শোষিত, বঞ্চিত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো বাংলাদেশ থেকে। অথচ সেই অর্থ ব্যবহার হতো পশ্চিম পাকিস্তানে।
বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা পেশ করার সময় বাধা দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় ফিরে এসে সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রেস কনফারেন্স করেন। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে একটা পাস করানো হয়। কাউন্সিল ডেকে কাউন্সিলে একটা পাস করানো হয়। মাত্র কয়েক মাসে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ছয় দফার ব্যাপক প্রচার করেন। যেকোনও একটা দাবি এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের মধ্যে সাড়া জাগানো, এটা ছিল একটা অভূতপূর্ব ঘটনা। যেটা ছয় দফার ব্যাপারে হয়েছিল।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাহজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।