কুমিল্লা আলেখারচরের আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হত্যার প্রধান আসামী আমান ও সাঈদ গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত সুইস গিয়ার উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান পিপিএম প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার জানান,গত ১৯/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন ০২নং উত্তর দূর্গাপুর ইউপিস্থ আলেখারচর দক্ষিন পাড়া সাকিনের জামে মসজিদ সংলগ্ন জনৈক হাজী সিরাজুল ইসলাম এর বাড়ীর পূর্ব পার্শ্বে পাকা রাস্তার উপর দুষ্কৃতকারীরা দূর্গাপুর ইউনিয়নের ০৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক’কে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
উক্ত হত্যাকান্ডের সংবাদ প্রাপ্তির পর পুলিশ সুপার, কুমিল্লা মহোদয় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন, আসামীদের সনাক্ত; গ্রেফতারের লক্ষ্যে জেলা গোয়েন্দা শাখাসহ কোতয়ালী থানা পুলিশকে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের পিতা আব্দুল ওদুদ বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ১০ জন সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৮৫, তারিখ- ২০/০৫/২০২৩খ্রিঃ ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনিদের্শনা অনুযায়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম ও কোতয়ালী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে এজাহারনামীয় ৭নং আসামী কাজী নিজাম উদ্দিন (৫৫) এবং ১০নং আসামী মোঃ জাকির হোসেন (৪৫) কে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি থানার লৌহগং এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত এজাহারনামীয় ২নং আসামী কাজী আমান উল্লাহ ও ৩নং আসামী আবু সাঈদকে গত ২০/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ সকালে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী আমান উল্ল্যাহ ও আবু সাঈদ আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক এর হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ গ্রহন করে । মাদ্রাসার কমিটি, গত ইউপি নির্বাচন ও মসজিদ কমিটি নিয়ে জহির ও এনামুলের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। সর্বশেষ জহিরের ফেন্সিডিল খাওয়ার ভিডিও প্রকাশ ও এই ভিডিও নিয়ে এনামুলের প্রচারণার কারনে সম্প্রতি এ বিরোধ চরমে উঠে।
তাছাড়া এনামুলের সাথে আসামী আমান উল্ল্যাহ ও সাঈদ এর ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল। এসব বিষয় নিয়ে জহির, আমান উল্যাহ ও সাঈদ গংরা ভিকটিম এনামুলকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ শুক্রবার আসামীগণ সবাই একই মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়ার পরিকল্পনা করে এবং রাতেই আসামী আমান উল্ল্যাহ একটি সুইস গিয়ার সংগ্রহ করে নিজের কাছে রাখে। জুম্মার নামাজ শেষে আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক মসজিদ থেকে বাহির হয়ে বাড়ীতে যাওয়ার পথে জনৈক হাজী সিরাজুল ইসলাম এর বাড়ীর পূর্ব পার্শ্বে পাকা রাস্তার উপর গ্রেফতারকৃত আসামী কাজী আমান উল্লাহ ও আবু সাঈদ সুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিম এনামুল হক’কে গলায় ও বুকে এলোপাথারী আঘাত করে হত্যা করে।
ঘটনার পর আসামীদ্বয় এলাকা ছেড়ে খাগড়াছড়ি পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামী আমান উল্ল্যাহ এর দেওয়া তথ্য ও দেখানো মতে চৌদ্দগ্রাম থানাধীন দত্তসার দিঘীর ১০০ গজ উত্তরে চট্টগ্রামমুখী লেনের পাশ হতে ঘটনায় ব্যবহৃত সুইস গিয়ারটি উদ্ধার করা হয়। এজাহারনামীয় অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।