কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলায় এসকে পেট্রল পাম্পে ছুরিকাঘাতে সহকর্মীকে খুন করে পালিয়ে যাওয়া হত্যাকারী রাব্বি হোসেনকে (২২) গ্রেফতার করেছে র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর সদস্যরা ।
নিহত মোঃ মারুফ (১৯) সদর দক্ষিণ উপজেলার মৃত. হাফেজুর রহমানের ছেলে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় গত ১০ মে নিহতের মা বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১১ মে রাত সাড়ে ৮টায় সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী রাব্বিকে গ্রেফতার করে র্যাব।
আসামী রাব্বি সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মোঃ শাহজাহানের ছেলে।
শুক্রবার (১২ মে) কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর ইনচার্জ মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, নিহত মারুফ ও হত্যাকারী রাব্বি প্রায় ৩ মাস আগে একসাথে এস কে ফিলিং ষ্টেশনে নজেলম্যান হিসাবে চাকুরীতে যোগদান করে। শিফট অনুযায়ী ৯ মে রাত ৮টা থেকে ১০ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত ভিকটিমের ডিউটি ছিল এবং ভিকটিম বদলী হিসেবে তার সহযোগী রাব্বিকে ডিউটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। রাব্বি তার ডিউটি বুঝে পাওয়ার পর ভিকটিমের ডিউটি পালনকালে বিভিন্ন যানবাহনের চালকের নিকট হতে পাওয়া বকশিশের ১০০ টাকার ভাগ দাবী করে। এই নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে ঘাতক রাব্বি হঠাৎ অফিস রুমে চলে যায় এবং অফিস রুম থেকে একটি ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে বেঞ্চের উপর বসা অবস্থায় মারুফকে বুকে ও গলায় উপরর্যপরি ছুরিকাঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তার বাড়িতে চলে যায়।
তারপর সে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী বাসে করে ফেনীতে চলে যায় এবং একটি হোটেলে আত্মগোপনে থাকে। পরবর্তীতে সে কুমিল্লা থেকে ফেনী যায় সেখান থেকে চট্টগ্রামে চলে যায়।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রামে হত্যাকারীর কোন নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন না থাকায় তার খালাতো ভাই মোঃ দেলোয়ার তাকে কুড়িগ্রামে তার বন্ধুর কাছে চলে যেতে বলে। তখন হত্যাকারী ১১ মে চট্টগ্রাম থেকে কুড়িগ্রামে আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে র্যাব-১১ এর একটি দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে উক্ত বাস থেকে তাকে গ্রেফতার করে। হত্যাকারীর স্বীকারোক্তি ও প্রাপ্ত তথ্য মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি তার বাড়ির একটি রুমে চাউলের ড্রামের নিচে থেকে উদ্ধার করা হয়।
উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীকে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, ১০ মে সকালে সদর দক্ষিণে বেলতলী বাজার সংলগ্ন এস কে পেট্রল পাম্পে কিশোর ভিকটিম মোঃ মারুফকে তার সহকর্মী হত্যাকারী মোঃ গোলাম রাব্বি ছুড়িকাঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
মারুফ আহত অবস্থায় দৌড়ে তাদের স্টাফরুমের দিকে যায় এবং স্টাফরুমের দরজার সামনে পৌঁছালে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার চিৎকার শুনে ফিলিং স্টেশনের অন্যান্য স্টাফরা ছুটাছুটি করে এসে ভিকটিমকে র’ক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।