কুমিল্লায় প্রেমিকার পরিবারের পিটুনিতে প্রেমিকের মৃত্যু, খবর শুনে প্রাণ গেল বাবার। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের ৪ ঘন্টার মধ্যে প্রেমিকার বাবা ও চাচাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২ সদস্যরা।
সোমবার (৮ মে) দুপুরে র্যাব প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন কুমিল্লা সদরের মধ্যম মাঝিগাছা (ফুল মিয়ার বাড়ী) এলাকার মৃত রঞ্জু মিয়ার ছেলে রওশন মিয়া ওরফে মুজা মিয়া (৪০) ও জাহাঙ্গীর মিয়া (৩২)।
র্যাব জানায়, ৭ মে সাংবাদিকদের সাথে ছেলের মৃত্যু সংবাদের বিষয়ে কথা বলার সময় কুমিল্লা সদরের মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের বাসিন্দা হিরন মিয়া হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। সদরের মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের রোশন মিয়া @ মুজা মিয়ার মেয়ে তন্বী আক্তারের সাথে স্থানীয় চা দোকানদার হিরন মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ মাহিনের প্রায় ০১ বছরের প্রেমের সম্পর্ক চলমান ছিল। কিন্তু মেয়ের পরিবারের পক্ষ হতে তাদের এ সম্পর্ক মেনে নেওয়া হয়নি যার ফলে মেয়ের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় ভিকটিম মাহিনকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল। এরই জের ধরে গত ৪ মে রাতে মেয়ের বাবা রওশন মিয়া @ মুজা মিয়া ও মেয়ের চাচা জাহাঙ্গীর আলম ভিকটিম মাহিনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ডেকে এনে বেধড়ক মারধর করে। এসময় তারা ভিকটিম মাহিনের মাথায় ও বুকে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ভিকটিম মাহিনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা ও ছাড়পত্র প্রদানের পর গত ৫ মে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে এবং বাড়িতে রেখে সেবা শুশ্রুষা করতে থাকে। পরবর্তীতে গত ৭ মে দুপুরে ভিকটিম মাহিন হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে পরিবারের লোকজন পুনরায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ছেলের মৃত্যুতে শোকাহত বাবা হিরন মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করে। উক্ত ঘটনা জানাজানি হলে মেয়ের বাবা, মেয়ের চাচা ও পরিবারের লোকজন বাড়ি তালাবদ্ধ করে আত্নগোপনে চলে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিম মাহিনের মা রুজিনা বেগম ৭ মে রাতে বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলা দায়েরের ৪ ঘন্টার মধ্যে ৭ মে রাতে কুমিল্লা সদর এলাকা হতে উক্ত মামলার ১ নং আসামী রওশন মিয়া ওরফে মুজা মিয়া ও ২ নং আসামী জাহাঙ্গীর মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় র্যাবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মেয়ের বাবা ও তার পরিবারের লোকজন মেয়ে তন্বীর সাথে নিহত ভিকটিম মাহিনের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। এরই প্রেক্ষিতে মেয়ের বাড়ির লোকজন প্রাথমিকভাবে ভিকটিম মাহিনকে বার বার তাগাদা দিলেও ভিকটিম মাহিন তার প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে। তাই আসামীদ্বয় ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম মাহিনকে অমানুষিক নির্যাতন করে ।