প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের সময় দেশজুড়ে সেমাইয়ের চাহিদা থাকে ব্যাপক। এ সুযোগে দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাইয়ের দাম বেড়ে গেছে।
শুধু সেমাইয়ের দাম নয়, বেড়েছে সেমাই রান্নার প্রধান উপাদান চিনি ও দুধের দামও। গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি চিনির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কিশমিশ ও কাজুবাদামসহ আনুষঙ্গিক অন্য পণ্যগুলোও।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানই ফাঁকা, ক্রেতা নেই। দোকানগুলোতে এখনো খোলা সেমাই আসেনি। ফলে বছরব্যাপী বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের বনফুলের ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা প্যাকেট। যা এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা প্যাকেট।
একই সেমাই অনলাইন শপে ২০০ গ্রামের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় দোকানগুলোতে ৫ টাকা আর অনলাইন শপে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা বেশি দামে। সে হিসেবে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৫০ টাকা বেশি।
মিঠাইয়ের বাদাম কিশমিশ ও ঘি সমৃদ্ধ লাচ্ছা সেমাই ২০০ গ্রামের প্যাকেট ১৫০ টাকা। অথচ এক বছরে আগে ২৫০ গ্রাম সেমাই বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় মিঠাই ব্র্যান্ডেড সেমাইয়ের পরিমাণও কমেছে দামও প্যাকেট প্রতি বেড়েছে ৫০ টাকা।
এর মধ্যে বনফুল, প্রাণ, ওয়েল ফুডের ২০০ গ্রাম লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা প্যাকেট। লম্বা কুলসন, কিশোয়ান, ড্যানিশ ও প্রিন্স ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই গত বছরের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা প্যাকেট। অনলাইনে শপে প্যাকেট প্রতি ৫ টাকা করে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অনলাইন শপ চালডালে রাঁধুনী ২০০ গ্রামের লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা। বনফুলের গোল ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। বনফুলের ভারমিচিলি সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
বসুন্ধরার ২০০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা। ডেকো ১৮০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। একমি ভার্মিসেলি সেমাই ২০০ গ্রামের ৪৫ টাকা। মিনার ১৮০ গ্রামের লাচ্ছা সেমাই ৪০ টাকা। লম্বা ডেকো ১৮০ গ্রাম শাহী সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। ২০০ গ্রামের লম্বা কক ভারমিসেলি লাল সেমাই ৪৫ টাকা। ৪০০ গ্রামের ওয়েল ফুড লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
রাজধানীর জাহিদ হাসান জেনারেল বলেন, এ বছর প্রাণের লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম বেড়েছে। আর সবকিছু আগের দামে আছে।
তিনি বলেন, বেচা বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহে কিছু বেচাকেনো হতে পারে। এগুলো সাধারণত ঈদের এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়।
রাজধানীর সেগুন বাগিচা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মুকুল রায় বলেন, রমজানের ঈদের সেমাই বিক্রি হয় দুই থেকে তিন দিন আগে। এখনো আমাদের খোলা সেমাই আসেনি, আরো এক সপ্তাহ পরে আসবে। আমাদের প্রত্যাশা এবার বিক্রি ভালো, হবে লাভ পাবো।
বাজার থেকে আসার ক্রেতা রাকিবুল হাসান বলেন, বাজারে এসেছিলাম খোলা সেমাই কিনতে কিন্তু কোথাও পাইলাম ন। তাই কিনিনি আগামী সপ্তাহে কিনব।
সেমাই রান্নার প্রধান উপাদান চিনি এখন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি। এর আগের বছর বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকা কেজি। এছাড়া মাঝারি মানের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। আর কাজু বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে।
সুপার শপগুলোতে ১০০ গ্রামের কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ২৫ গ্রামের পেস্তাবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। ৫০ গ্রামের কাজুবাদাম বিক্রি হচ্ছে ৭৮ টাকা। আর ১০০ গ্রামের মিক্সড ফ্রুট বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।