চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার ছাত্ররা পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। বুধবার দুপুর থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। মাদ্রাসার ফটক বন্ধ করে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ, শিক্ষক নুরুল ইসলাম জেহাদী ও মাওলানা আনাস মাদানীর দপ্তর ভাঙচুর করেন।বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে হেফাজত ইসলামের আমির ও মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ছেলে এবং হেফাজতের প্রচার সম্পাদক, মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণ দাবি করা হয়।চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদৌল্লাহ রেজাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।
জানা যায়, বুধবার দুপুরের নামাজের পর শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানীর অপসারণসহ পাঁচ দফা দাবিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সব ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। তাৎক্ষণিক বিষয়টি তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাসহ সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। তবে ফটক বন্ধ থাকায় তারাও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। মাদ্রাসায় গোলযোগের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার মাইকিং করেন।
বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি সংবলিত একটি প্রচারপত্র বিতরণ করা হলেও সেখানে কারা বা কাদের পক্ষ থেকে এ প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়েছে তার উল্লেখ নেই। সংবাদকর্মীদের কাছে এ প্রচারপত্র সংরক্ষিত রয়েছে।পাঁচ দফার প্রথম দাবি মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে করা। দ্বিতীয় দাবি, ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাস্তবায়নে সব হয়রানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ, তৃতীয় দাবি, আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব মাযূর হওয়ায় পরিচালকের পদ থেকে তাকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দেওয়া। চতুর্থ দাবি, মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিপূর্ণভাবে সুরার নিকট হস্তান্তর এবং পঞ্চম দাবি বিগত সুরার হাক্কানি আলেমদের পুনরায় নিয়োগ এবং সুরার মধ্যে ‘দালালদের’ বহিষ্কার।প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়, তাদের এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি হিসাবে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।
এ ছাড়া আন্দোলন সফল করতে জেল-জুলুমসহ যেকোনো ত্যাগের জন্য তাদের প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের পক্ষে বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভেতরে অবস্থান করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।হাটহাজারী থানার ওসি মাসুদ আলম পাঁচ দফা দাবিতে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ প্রদর্শনের কথা স্বীকার করে বলেন, সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।