কুমিল্লায় প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর সদস্যরা।
র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর ইনচার্জ মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সময়ের সাথে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন প্রলোভন
দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকটি প্রতারকচক্র।
সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লাসহ সারাদেশে বিভিন্ন বাসা-বাড়ীতে সাবলেট ও কোন প্রকার
প্রয়োজনীয় তথ্যাদী ব্যতিত বাসা ভাড়া নিয়ে অপরিচিত পরিবারের সাথে সু সম্পর্ক স্থাপন করে
বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকটি পরিবারের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি
প্রতারক চক্র। বেশ কিছু প্রতারণার চিত্র প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের
নিকট উপস্থাপন করা হলেও এই ধরণের আরো অনেক প্রতারণার চিত্র ভুক্তভোগীদের অজ্ঞতার কারণে সাধারণ মানুষের নিকট অজানাই থাকে। এধরনের প্রতারণার স্বীকার দুইজন ভুক্তভোগী মোছাঃ হাসিনা বেগম (৭০)
এবং মোছাঃ সালমা মির্জা, (২১) গত ২০ আগষ্ট ২০২২ তারিখে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লায় স্ব-
শরীরে হাজির হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যেখানে তারা উল্লেখ করেন, শান্তিরক্ষী মিশনে
নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী পরিচয়ে এবং স্বামীর অনুদানের টাকা উত্তোলনের নামে প্রতারণার মাধ্যমে
তাদের নিকট হতে আট লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারকচক্র।
ভুক্তভোগী মোছাঃ হাসিনা বেগম দৌলতপুর, টিএন্ডটি মোড়, হাকিম মঞ্জিলের মালিক। জুলাই ২০২২ মাসে নুসরাত জাহান জান্নাত (২৭), নিজেকে শান্তিরক্ষী মিশনে নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী পরিচয়ে আমার বাসার ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়।
তার নিকট জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য তথ্যাদি চাহিদা করলে তিনি বলেন আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ী আমাকে শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করায় আমি বাসা ছেড়ে চলে আসছি, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমি আপনাকে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে দিবো এবং আমি আপনার বাসায় ২-৩ মাসের মতো থাকবো কারণ ধর্মপুর এলাকায় আমি নিজের জমিতে বাড়ী তৈরীর কাজ শুরু করবো। পরবর্তীতে জান্নাত আমার সাথে বিভিন্ন প্রকার কথা বার্তার মাধ্যমে আমার মন জয় করে এবং প্রায়ই আমার খোজ খবর নেয়।
একই অভিযোগে অপর ভুক্তভোগী মোছাঃ সালমা মির্জা জানায়, তিরিএকজন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। জান্নাত তার পাশের ফ্ল্যাটে বাসা ভাড়া নেয়ার পর তার সাথে বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা করে প্রতিনিয়ত তার রুমে প্রবেশ করে এবং তার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।
জান্নাত তাদের উভয়কে জানায় এই মাসের মধ্যে তার স্বামীর সরকারী অনুদানের টাকা সোনালী ব্যাংক লিঃ কোর্ট বিল্ডিং, কুমিল্লা শাখায় জমা হয়েছে এবং উক্ত টাকার পরিমাণ ১ কোটি টাকা যাহা উত্তোলন করিতে উক্ত ব্যাংকে ১০% হারে ভ্যাট হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে।
জান্নাত তাদেরকে জানায় তার নিকট ২লক্ষ টাকা রয়েছে বাকী ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে দিতে পারলে সে তার অনাত ছেলেটিকে নিয়ে বাঁচতে পারবে এবং একইসাথে টাকা উত্তোলনের ৩০ মিনিটের মধ্যে তাদের কাছ থেকে নেওয়ার টাকার সাথে ১লক্ষ করে অতিরিক্ত টাকা ফেরত প্রদান করবে।
জান্নাতের কথা অনুযায়ী ৮ আগষ্ট ২০২২ তারিখে ভুক্তভোগীরা ৮ লক্ষ টাকা প্রদান করে এবং টাকা প্রাপ্তির পর পরই জান্নাত উধাও হয়ে যায়। যেহেতু জান্নাতের কোন পরিচয়পত্র বা তথ্যাদি ভুক্তভোগীদের নিকট ছিলনা এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে ভুক্তভোগি দুজনে প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে থানায় জিডি করেন। পরে কুমিল্লা র্যাব ১১ সিপিসি ২ এর নিকট বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
উক্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাইপূর্বক র্যাব-১১, সিপিসি-২ গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং
মাঠ পর্যায়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। কয়েকটি সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণপূর্বক গোয়েন্দা সূত্র
হতে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এই ঘটনার মূল আসামী জান্নাত ও সংশ্লিষ্ট সকলকে চিহ্নিত করার নিমিত্তে একাধিক টীম মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। এরই মধ্যে চলতি মাসের ২ অক্টোবর আরও এক ভুক্তভোগী মোঃ বিল্লাল হোসেন (২৫) র্যাবের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । যেখানে তিনি উল্লেখ করেন আমার পার্শ্ববর্তী ফ্ল্যাটের একজন মহিলা তার স্বামী শান্তিরক্ষী মিশনে নিহত হয়েছেন এবং তার স্বামীর সরকারী অনুদানের টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে ১০ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ২ ঘন্টার জন্য ধার হিসেবে নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
অভিযোগটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় পূর্বের অভিযোগের একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই ভূক্তভোগীর নিকট হতেও প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি জানা যায়।
পূর্বের অভিয্গো হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি ও নতুন অভিযোগটি যথাযথ বিশ্লেষণ করে চাঞ্চল্যকর
কিছু তথ্য পাওয়া যায়। দুইটি ঘটনার মূলহোতা একজন মহিলা এবং তার পিছনে বেশ বড় একটি
প্রতারক চক্র রয়েছে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এই প্রতারকচক্রের মূল হোতা জান্নাত ও তার সহযোগীদের সনাক্ত করে ০
৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখ রাতে লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার ১৪ নং
মান্দারী ইউপি এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মূলহোতা নুসরাত জাহান জান্নাত (২৭), পিতা-মৃত শামসুল হক, মাতা-মৃত খোরশেদা বেগম, স্বামী-আব্দুর রহমান, সাং-পশ্চিম জামিরতলী , তিনজন সহযোগী আব্দুর রহমান (৩৫), পিতা- আমির হোসেন, মাতা-জাহানারা বেগম,
সাং-পশ্চিম জামিরতলী: সাহাবুদ্দিন @ আলাউদ্দিন (৪৬) পিতা-মৃত ইব্রাহিম, মাতা-খুরশিদা বেগম, সাং মোহাম্মদ নগর, পারভীন আক্তার (৪৫), পিতা-আমির হোসেন, মাতা-জাহানারা বেগম, স্বামী-সাহাবুদ্দিন, সাং-মোহাম্মদ নগর: সর্ব থানা-চন্দ্রগঞ্জ, জেলা-লক্ষীপুর এবং কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ
থানার কোটবাড়ী এলাকায় একই তারিখ রাতে আরেকটি পৃথক অভিযানে আরো ৩ জন সহযোগী মোঃ ইলিয়াস হোসেন, পিতা-মোঃ সোলায়মান মিয়া, সাং-থামপার (হাজী বাড়ী), থানা-শাহরাস্তি, জেলা-চাঁদপুর, ফাতেমা আক্তার (৩৫), স্বামী-কিশোর খান, সাং-শালমানপুর, থানা-সদর দক্ষিণ, জেলা-কুমিল্লা, মোঃ বশির উদ্দিন, পিতা- জাকির হোসেন আনু, সাং-এগার গ্রাম, থানা-বরুড়া, জেলা-কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের নিকট হতে ৯টি মোবাইল ফোন, ২টি চেক বই, নগদ ৩২ হাজার ৯শত টাকা এবং বরুড়ার ভাড়া বাসার চাবি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেয়া তথ্যঅনুযায়ী জানা যায়, সম্পুন্ন প্রতারণার প্রক্রিয়াটি
মুলত চারটি গ্রæপে সম্পাদন করা হয়। প্রথম গ্রæপ টার্গেট/বাসা চিহ্নিত করে, দ্বিতীয় গ্রæপ
বাসা ভাড়া করে এবং টার্গেটের মন জয় করে টাকা প্রদানে সম্মতি করায়, তৃতীয় গ্রæপ ব্যাংক
কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করে এবং ব্যাংক এলাকা পর্যবেক্ষণ করে এবং চতুর্থ গ্রæপ সকল প্রকার
যাতায়াত নিশ্চিত করে। এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ইতিমধ্যে তারা কয়েকটি পরিবারের প্রায় কোটি
টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী ও চক্রের মূলহোতা নুসরাত জাহান জান্নাত জানায় তার জন্মের ছয় মাসের
মধ্যে তার পিতা মাতার ডিভোর্স হয় এবং চৌদ্দ বছর পর্যন্ত সে তার দাদা-দাদীর নিকট বেড়ে উঠে। চৌদ্দ বছর বয়সে সে প্রথম বিয়ে করে এবং এক বছর সংসার করার পর ডিভোর্স হলে সে আবার বিয়ে করে এবং চার বছর সংসার করার পর পুনরায় ডিভোর্স হয়। তার প্রথম ঘরে একটি ও দ্বিতীয় ঘরে তিনটি সর্বমোট চারটি সন্তান রয়েছে। চক্রের মূলহোতা জান্নাত সার্জেন্ট রেজাউল করিমের বাসায় কাজ করার সময় জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরী করে এবং মাতার নাম একই রাখলেও পিতার নাম সার্জেন্ট রেজাউল করিম হিসেবে
লিপিবদ্ধ করে। এরপর জান্নাত তার বর্তমান স্বামী অর্থাৎ গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুর রহমান (৩৫) কে বিয়ে করে এবং অর্থনৈতিক অস্বছলতার মধ্য দিয়ে সংসার করে আসছে। ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত সে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে কাজ করার নামে ছোট ছোট চুরি করা শুরু করে এবং সফলতার সহিত বেশ কিছু টাকা উপার্জন করে। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সে গ্রেফতারকৃত আসামী আব্দুর রহমান, সাহাবুদ্দিন, পারভীন আক্তার, মোঃ ইলিয়াস হোসেন, ফাতেমা আক্তার ও মোঃ বশির উদ্দিন এবং পলাতক আসামী কামাল (৩৫), পিতা-মৃত আশরাফ খান, আবুল খায়ের বাবুচী (৪৫), পিতা-বারু মিয়া, জাহানারা @বুলু (৩০), স্বামী-আবুল খায়ের বাবুচী, র্সাং-সাং-শালমানপুর, থানা-সদর দক্ষিণ, জেলা-কুমিল্লা এর সাথে অল্প পরিশ্রমে প্রতারণার মাধ্যমে কিভাবে নিজেদের অর্থনৈতিক স্বছল্লতা আনয়ন করা যায় এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এবং প্রতারনার এই কৌশলটি অনুসরণ শুরু করে।
উল্লেখ্য যে, আসামী পারভীন আক্তার চক্রের মূলহোতা জান্নাতের আপন ননদ এবং সাহাবুদ্দিন ননদের স্বামী। অপরদিকে আসামী আবুল খায়ের ও জাহানারা চক্রের মূলহোতা জান্নাতের আপন চাচা ও চাচী। জান্নাত জানায় পলাতক আসামী আবুল খায়ের পেশায় একজন বাবুর্চী তাই সে ও তার স্ত্রী পলাতক আসামী জাহানারা @বুলু বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে রান্নার কাজ করার সময় যে সমস্ত বাড়ীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল এবং বাসা খালি আছে ঐ সমস্ত বাড়ীগুলো টার্গেট করে। খায়েরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জান্নাত ঐ সমস্ত
বাড়ীতে নিজেকে শান্তিরক্ষী মিশনে নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেয়। অধিকাংশ
সময় সে তার নিকট জাতীয় পরিচয় পত্র ও অন্যান্য তথ্যাদি চাহিদা করলে তার শ্বশুড় শ্বাশুড়ী তাকে শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করায় সে বাসা ছেড়ে চলে এসেছে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে দিবে বলে বাসা ভাড়া নেয়। কোন বাড়ী ওয়ালা তাতে রাজি না হলে আসামী জান্নাত তার ভাল পরিচয় পত্রটি শুধুমাত্র প্রদান করে। ঐ বাড়িতে প্রথমে সে বাড়ীওয়ালা অথবা পার্শ্ববর্তী ফ্ল্যাটের কাউকে টার্গেট করে এবং তাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। প্রথমদিকে টার্গেটকৃতদের বাড়ীতে বিভিন্ন প্রকার খাবার প্রদান করার মাধ্যমে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। এভাবে ৫-৭ দিন অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বসবাসের মাধ্যমে সে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের মন জয় করে। এহেন পদ্ধতি অবলম্বন করেই সে ভ‚ক্তভোগী মোঃ বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রীর মন জয় করে এবং তাদের দুর্বল পয়েন্টগুলো খুজে বের করে।
জান্নাত নিজের অনেক জায়গা সম্পত্তি রয়েছে বিষয়টি বিল্লাল এর স্ত্রীকে বুঝানোর জন্য
জান্নাত আসামী মোঃ বশির উদ্দিনের সাথে সমঝোতা করে এবং প্রায়ই বশিরের দোকানে গিয়ে
বিল্লালের স্ত্রীসহ গল্প করে ও পার্শ্ববর্তী সকল দোকান তার নিজের বলে দাবী করে। যখন ভুক্তভোগীরা তাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা শুরুকরে তখন সুযোগ বুঝে তার স্বামীর সরকারী অনুদানের টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে ১০ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে বলে ভ‚ক্তভোগীর নিকট দশ লক্ষ টাকা ধার দেয়ার জন্য অনুরোধ করে।
জান্নাত ভুক্তভোগীকে বলে সে ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা উত্তোলনের সাথে সাথে তাকে ব্যবসার
জন্য বিনাসুদে ২০ লক্ষ টাকা ধার দিবে। যেহেতু ভক্তভোগী বিল্লাল বিকাশের ব্যবসা করে এবং বর্তমানে
ঋণগ্র¯’ রয়েছে তাই বিল্লালের স্ত্রী জান্নাতের কথায় বিশ্বাস করে টাকা দিতে রাজি হয় এবং ২০
সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে টাকা দিবে বলে জানায়। উল্লেখিত তারিখে ভ‚ক্তভোগী বিল্লালের স্ত্রী আসামী জান্নাতের সহিত বিল্লালের বন্ধু তহিদুল ইসলাম সহ গ্রেফতারকৃত আসামী ইলিয়াসের অটো যোগে বরুড়া থেকে কুমিল্লা শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করে এবং আসামী জান্নাত ভ‚ক্তভোগী বিল্লালকে জানায় তার অনুদানের এক কোটি টাকার মধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা বরুড়া সিটি ব্যাংক শাখা হতে উত্তোলন করতে হবে
তাই বিল্লাল সিটি ব্যাংকের সামনে অপেক্ষারত থাকে। পথিমধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামী বশির বরুড়া আল-আরাফা ব্যাংক এর সামনে সিএনজি নিয়ে অপেক্ষা করে এবং উক্ত সিএনজিতে উঠে আসামী জান্নাত ও বশির এবং ভ‚ক্তভোগী বিল্লালের স্ত্রী ও বন্ধু তহিদুল ইসলাম কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক লিঃ, কুমিল্লা শাখায় গমন করে। সোনালী ব্যাংকে পৌছানোর পর আসামী জান্নাত তহিদুল ইসলামকে বরুড়া চলেযেতে বলে এবং ব্যাংক কর্মকর্তা ওরফে আসামী আব্দুর রহমান আসামী জান্নাতকে টাকা উত্তোলনের জন্য দুইজনের পাসপোর্ট সাইজের ছবি দরকার হবে বলে জানায়।
ইতিমধ্যে আসামী সাহাবুদ্দিন ও পারভীন আক্তার ব্যাংক এলাকায় অব¯’ান করে চারদিক পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। তাদের নিকট থেকে ক্লিয়ারেন্স পেয়ে আসামী জান্নাত ব্যাংকের নীচে বিল্লালের স্ত্রীর নিকট থেকে টাকাগুলো তার হেফাজতে নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে জান্নাত ও বিল্লালের স্ত্রী পার্শ্ববর্তী ষ্টুডিওতে ছবি তোলতে যায় এবং ৫মিনিট পরে আসামী আব্দুর রহমান ব্যাংক কর্মকর্তা সেজে আসামী জান্নাতকে ফোন দিয়ে অতিদ্রæত ব্যাংকে ভ্যাটের টাকা জমা না দিলে আজকে আর অনুদানের টাকা উত্তোলন করতে পারবে না মর্মে জানায়। তাই আসামী জান্নাত বিল্লালের স্ত্রীকে ষ্টুডিওতে রেখে ব্যাংকে টাকা জমা করার উদ্দেশ্যে গমন করে। ইতিমধ্যে অপর আসামী ফাতেমা সিএনজি নিয়ে জান্নাতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে এবং জান্নাত ষ্টুডিও থেকে বের হয়ে সিএনজি যোগে দ্রæত অত্র এলাকা ত্যাগ করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে আতগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে তাহারা সম্পুর্ণ টাকা নিজেদের মধ্যে পূর্ব নির্ধারিত অংশ অনুযায়ী ভাগ করে নেয়।
উক্ত বিষয়ে ৭জন গ্রেফতারকৃত, ৩ জন পলাতক এবং ২-৩জন অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে
কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।